পাবনার বেড়ায় সব রোগের চিকিৎসা দিচ্ছেন নার্স!
পাবনার বেড়া উপজেলায় ডিগ্রি ছাড়াই ডাক্তার পরিচয়ে সব রোগের চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে আখিঁ খাতুন নামে নার্সের বিরুদ্ধে। বাড়িতে চেম্বার খুলে গর্ভবতী নারীদের নরমাল ডেলিভারীর জন্য করেছেন সব ব্যবস্থা। এ ছাড়া বিসমিল্লাহ মেডিসিন কর্ণার নামে ফার্মেসীও আছে সেখানে।
আখিঁ বেড়া উপজেলার শিবপুর গ্রামের আনিছুল হকের স্ত্রী।
জানা গেছে, পাবনার একটি বেসরকারী ক্লিনিকে নার্স হিসেবে চাকরি করতেন আখিঁ। পরে নিজ বাড়িতেই চেম্বার খুলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেখেন রোগী, লেখেন ওষুধ। কিন্তু চিকিৎসা বা ওষুধ বিক্রির কোনো বৈধতা নেই তার। ডাক্তার হওয়ার জন্য নেই কোনো ডিগ্রি। তিনি প্রকৃতপক্ষে মিডওয়াইফ নার্স কিন্তু নামের আগে লেখেন ডা. আখিঁ খাতুন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে আমিনপুর, কাশিনাথপুর, নান্দিয়ারা, টাংবাড়ী, কাবাষকান্দা, দাঁতিয়া গ্রামে দেখা গেছে, চায়ের দোকানে, বিভিন্ন দেয়ালে, বৈদুতিক খুঁটির সঙ্গে স্টিকারে লাগানো ‘বিসমিল্লাহ মেডিসিন কর্ণার’ পরিচালনায় আখিঁ খাতুন। রেজিস্ট্রার মিডওয়াইফ (নোয়াখালী সদর হাসপাতাল) এখানে দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিডওয়াইফ দ্বারা নরমাল ডেলিভারী, গর্ভবতী মা ও শিশুর সু-চিকিৎসা করা হয়। এখানে সকল প্রকার ওষুধ পাওয়া যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এখানে যেসব মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন তারা দরিদ্র। তাই অতি সহজেই খেটে খাওয়া মানুষদের কাছ থেকে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন আখিঁ।
চিকিৎসা নিতে আসা রুবিলা খাতুন বলেন, ‘আমরা গরীর মানুষ। তাই এখানে কম টাকায় চিকিৎসা করাই। কখনো রোগ ভালো হয়, কখনো হয় না। না হলে সরকারি হাসপাতালে যাই।’
কাশিনাথপুর ড্রাগিস্ট অ্যান্ড কেমিস্ট কমিটির সভাপতি সেলিম হোসেন জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ফার্মেসী দিতে হলে অনেক শর্তাবলীর পাশাপাশি তাকে ফার্মাসিস্ট হতে হবে ও তার ড্রাগ লাইসেন্স থাকতে হবে। বিসমিল্লাহ মেডিসিন কর্ণার নামে ফার্মেসী তাদের সমিতির আওতাধীন না।
অভিযুক্ত আখিঁ এ বিষয়ে বলেন, ‘আমি কোনো চিকিৎসা দিই না। আমি গর্ভবতীদের নরমাল ডেলিভারী করাই। কিছু ওষুধ বিক্রি করি। ড্রাগ লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন। আমি ডাক্তার নই, এটা প্রেসের দোকান থেকে ভুল করে লিখে দিছে।’
বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাতেমা তুয জান্নাত বলেন, ‘মিডওয়াইফ মানে নার্স (সেবিকা) তবে সে যদি সরকারি হাসপাতালে থাকে সেক্ষেত্রে গর্ভবতী মহিলাদের নরমাল ডেলিভারী করাতে পারেন।’
পাবনা জেলা সিভিল সার্জন শহীদুল্লাহ দেওয়ান জানান, এমবিবিএস, বিডিএস ছাড়া কেউ নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিতে পারে না।
বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন