পাবনার সেই ৩ বন্ধুর মৃত্যুর ‘আসল রহস্য’ উদঘাটন!
পাবনা শহরের চক ছাতিয়ানী মোল্লাপাড়া মহল্লার ৩ বন্ধুর মৃত্যু মদপানে নয়, তারা মৃত্যুবরণ করেছেন ককটেল (এক ধরনের মিশ্রণকৃত নেশা) খেয়ে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তে এ তথ্য জানা গেছে।
অতিরিক্ত মদ প্রানে তিন বন্ধুর মৃত্যু ও ২জন গুরুত্বর অসুস্থর খবর প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করা হয়েছে বলে তারা দাবী করেছেন।
রাজশাহী বিভাগীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী পরিচালক রওনক আক্তার মিতু জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা সবুজের জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন তিনি। এ সময় সবুজ তাকে জানায়, রুমন পাবনার বড় বাজার থেকে একটি পলিথিনে ৫শ মি.লি সাদা এক ধরনের লিকুইড নিয়ে আসে, সম্ভবত এটা ‘স্প্রিট’ হবে।
এরপরে তারা চক ছাতিয়ানী মোল্লাপাড়ার জনৈক শিল্পীর নির্মাণাধীন বাড়িতে এক সাথে হয়ে ঘুমের বড়ি, কোক ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট অল্প পরিমাণ পানির সাথে মিশিয়ে (ককটেল) বানিয়ে পান করে। পরে বিরানী ও চিপস খায়। এরপর থেকে অসুস্থতা বোধ করেন তারা।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি থাকা শহিদুলের জবানবন্দি গ্রহণ করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদর সার্কেলের পরিদর্শক শাহ জালাল। সেখানে শহিদুল জানান, তারা মদ পান করেনি। সে রুমনের সাথে শহরের বড় বাজার যায়। তাকে মোড়ে দাড় করিয়ে রেখে ভেতর থেকে একটি পলিথিনে স্প্রিট আনে রুমন।
এরপরে তারা ৫ জন ঘুমের বড়ি, কোক ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট পানির সাথে মিশিয়ে ককটেল (এক ধরনের মিশ্রণকৃত নেশা) বানায় ও খায়। পরে বিরানী ও চিপস খাওয়ায় গ্যাসের কারণে বুক জ্যাম হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানান শহিদুল।
হাসপাতালে বিছানায় শুয়েই রুমন, জনি ও রুবেলের মৃত্যুর কথা শুনে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন শহিদুল ও সবুজ। এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় সবুজ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও শহিদুল পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
জবানবন্দিতে তারা আরো বলেন, ‘কেউ যেনো এমনভাবে ককটেল বানিয়ে না খায়। খুব কষ্ট পেয়েছি, মৃত্যুর যন্ত্রণা যে কি তা খুব কাছ থেকে দেখেছি।’
৩ বন্ধুর অনাকাঙ্খিত মৃত্যুর ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হয়। যেখানে অসুস্থদের জবানবন্দি থেকে উঠে এসেছে এমন তথ্য। বিভাগের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জবানবন্দিসহ তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ডিসেম্বর রাতে ৫ বন্ধু রুমন, জনি, রুবেল, সবুজ ও শহিদুল অতিরিক্ত নেশা করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুমন, জনি, রুবেল মারা যায়। সবুজ ও শহিদুল এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন