পায়রা বন্দরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়তে আগ্রহী সৌদি আরব
পায়রায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে সৌদি আরবের বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিনিয়োগ উপদেষ্টার দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে তিন দিনের সৌদি আরব সফর শেষে দেশে ফিরে মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সালমান এফ রহমান বলেন, আমরা বাংলাদেশে সৌদি আরবকে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল দিতে চাই। তাদের বিনিয়োগমন্ত্রী পায়রাতে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও সৌদি আরবে দুই দেশের যৌথ মালিকানায় ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপন করতে চায় বাংলাদেশ। দেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সারের নিরবচ্ছিন্ন চাহিদা পূরণে এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা।
বিনিয়োগ উপদেষ্টা বলেন, সৌদিতে জয়েন্ট ভেনচারে আমরা একটি ইউরিয়া সার কারখানা করব। উৎপাদিত ইউরিয়ার শতভাগ আমরাই আমদানি করে নিয়ে আসব। তারা প্রস্তাবটি নিয়ে আগাতে চায়। মার্চ মাসের মধ্যে এটার সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হবে। শুধু সরকার টু সরকার নয়, এখানে বেসরকারি খাতেরও যুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
আইএমসিটিসি ‘সভায় কিছু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি’ উল্লেখ করে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ইসলামের নামে যে সন্ত্রাসবাদ হয় সেটার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। সন্ত্রাস, সন্ত্রাসই। সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নেই। ইসলামের বদনাম করার জন্য তারা এসব করে। এই সংস্থার মাধ্যমে ইসলামিক দেশগুলোর মধ্যে যে সহযোগিতা আছে সেটি আরও বেগবান করার বিষয়ে সবাই একমত। সেখানে জোরালোভাবে ফিলিস্তিন এবং গাজায় যা হচ্ছে সবাই নিন্দা জানিয়েছে এবং সমস্যার সমাধান করতে বলেছে। এছাড়াও বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তারা কাজ করবে।’
দেশের চলমান ডলার সংকটে সৌদি আরবের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘আমরা সৌদি থেকে জ্বালানি আমদানিতে মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে ৪৫ দিন সময় পাই। কিন্তু ডলারের কারণে আমরা তাদের বলেছি আমাদের যদি এক বছর সময় দেওয়া হয় তাহলে আমাদের জন্য ভালো হয়। তারা বলেছে, তারা সেটি বিবেচনা করবে।’
শেভরন বিবিআনাতে নতুন বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা বলছে এখানে আমরা ভাবছি গ্যাস আছে। কিন্তু ড্রিলিং না করা পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। ফলে আমরা এখানে নতুন বিনিয়োগ করতে চাই। তারা গভীর সমুদ্রে তেল, গ্যাস অনুসন্ধানেও আগ্রহী। আমাদের অর্থনৈতিক যে উন্নতিটা হবে, সেখানে জ্বালানি খাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
সালমান এফ রহমান বলেন, ফুড সিকিউরিটির বিষয়ে সৌদি আরব বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। মূলত তারা বাংলাদেশে সবজি, মাছ বা অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন করবে, তারা সেটি তাদের দেশে নিয়ে যাবে। তারা ফিজিবল স্টাডি করে দেখবে, বাংলাদেশে কোন ক্ষেত্রে তাদের বিনিয়োগ করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশের ও সৌদি আরবের ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে গবেষণা করে লং গ্রেড রাইস উৎপাদনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ইসলামিক মিলিটারি কাউন্টার টেরোরিজম কোয়ালিশনে (আইএমসিটিসি) বাংলাদেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন সালমান এফ রহমান। সভায় জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে সমন্বিত করণীয় বিষয়ে সদস্য দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া সৌদি আরবে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে সে দেশের জ্বালানি মন্ত্রী, বিনিয়োগ মন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন সালমান এফ রহমান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন