পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে জনজীবন স্বাভাবিক

জুম্ম ছাত্র জনতার ডাকা আট দফা দাবি আদায়ে অনিদিষ্টিকালের তিন পার্বত্য জেলায় সড়ক অবরোধে রাঙামাটি শহরের অভ্যন্তরিন যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা থেকে রাঙামাটিতে সব গাড়ি প্রবেশ করলেও রাঙামাটি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে কোন গাড়ি ছেড়ে যায়নি।

জেলা শহরের অভ্যন্তরিন একমাত্র পরিবহন অটোরিকশা (সিএনজি) চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। খুলেছে শপিংমল ও মার্কেট। এছাড়া জেলার শহরের সঙ্গে ছয় উপজেলার লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রী কিছুটা কম বলে জানায় লঞ্চ মালিক সমিতি।

অন্যদিকে রাঙামাটি-বান্দরবান, রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও বেলা এগারোটার পর রাঙামাটি-চট্টগ্রাম রুটের বাসের টিকেট বিক্রি শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।

রাঙামাটির পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন জানান, সকাল থেকে রাঙামাটিতে সব কিছু স্বাভাবিক রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যতটুকু সর্তক অবস্থায় থাকা উচিত ততটুকু সর্তক রয়েছে। খাগড়াছড়ির যে কোনো ইস্যুকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রদায়িক বিভেদ বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা না করতে পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন রাঙামাটি পুলিশ সুপার।

এর আগে গতকাল রবিবার রাঙ্গামাটিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এক বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মারুফ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে।এসময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, খাগড়াছড়ির ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাঙ্গামাটিতে যাতে কোনো রকম সাম্প্রদায়িক উস্কানি বা গুজব ছড়ানো না হয় সেজন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে। সাম্প্রদায়িক বিনষ্টকারী যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সভায় পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব রটিয়ে একটি মহল পাহাড়কে অশান্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডি আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। রাঙ্গামাটিতে গুজব সৃষ্টিকারী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর অবস্থান রয়েছে।

উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ি সিঙ্গানালা এলাকায় এক মারমা ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে খাগড়াছড়িতে অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ ডাকা হয়। পরবর্তীতে প্রশাসন খাগড়াছড়ি শহরের ১৪৪ ধারা জারি করে। ২৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা এলাকায় সংঘর্ষে ৩ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়।

জুম্ম ছাত্র জনতার ব্যানারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আট দফা দাবি তুলে অনিদিষ্টিকালের জন্য তিন পার্বত্য জেলায় সড়ক অবরোধের ডাক দেয় সংগঠনটি। একই সঙ্গে অবরোধ চলাকালে সকল পর্যটন কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে পোস্টে। তবে এই বিষয়ে জানতে ‘জুম্ম ছাত্র জনতা’র কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।