পার্বত্য রাঙ্গামাটিতে ইউপিডিএফ’র কালেক্টরকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ


পার্বত্য জেলার রাঙ্গামাটিতে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির স্বশস্ত্র সদস্যরা প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেট পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট’র স্বশস্ত্র কর্মী নির্মল খীসাকে(৩২) গুলি করে হত্যা করেছে।
হত্যার শিকার নির্মল খীসা(৩২), নানিয়ারচর উপজেলার তৈচাকমা গ্রামের সুনীল বিহারী খীসার ছেলে।
রোববার (১৬ই মার্চ) সকালে জেলা সদরের সাফছড়ি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের তন্যা খামার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, রোববার সকালে তন্যা খামার পাড়া এলাকায় সন্তু লারমার পিসিজেএসএস’র সদস্যরা ইউপিডিএফ’র তিনজন কালেক্টরকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এসময় ঘটনাস্থলে ইউপিডিএফ’র সাব পোস্ট পরিচালক ও কালেক্টর নির্মল খীসা গুলিতে নিহত হন। তবে ইউপিডিএফ’র অন্য সদস্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সাহেদ উদ্দীন বলেন, আমিও ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে রওনা করেছে। পরে বিস্তারিত জানা যাবে।
এদিকে ঘটনার পর পরই ইউপিডিএফ’র প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের প্রধান নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতির মাধ্যমে এ ঘটনার জন্য সন্তু লারমার পিসিজেএসএসকে দায়ী করা হয় এবং এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন হলেও অন্তবরতীকালীন সরকার শেখ হাসিনার দোসর সন্তু লারমার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। রাষ্ট্রীয় বিশেষ মহল এখনো সন্তু লারমাকে মদদ দিয়ে খুন-খারাবি চালিয়ে যাচ্ছে। আজকে খামার পাড়ায় ইউপিডিএফ সদস্যকে হত্যার ঘটনাও তারই অংশ।
ইউপিডিএফ নেতা নির্মল খীসার হত্যাকারীদেরসহ হত্যাকান্ডের মূল হোতা সন্তু লারমাকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ থেকে অপসারণ করে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে। রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের খামারপাড়ায় পিসিজেএসএস সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক ইউপিডিএফ সদস্যকে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)।
রোববার (১৬ মার্চ) সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফের রাঙামাটি জেলা সংগঠক সচল চাকমা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, রোববার সকাল ৯টার সময় রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের ৬নং ওয়াডের খামার পাড়ায় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা পিসিজেএসএস সন্তু গ্রুপের ৬/৭জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী ইউপিডিএফ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়।
এতে সন্ত্রাসীরা গুলি করে ইউপিডিএফ সদস্য নির্মল খীসাকে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের পর সন্ত্রাসীরা কাটাছড়ি স্বর্গপুর বনভাবনা কেন্দ্রের দিকে চলে যায় বলে স্থানীয়রা জানান। হত্যার শিকার নির্মল খীসা (৩২), নান্যাচর উপজেলার তৈচাকমা গ্রামের সুনীল বিহারী খীসার ছেলে। ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানা যায়, রোববার সকালে রূপায়ন চাকমার নেতৃত্বে পিসিজেএসএস সন্তু গ্রæুপের ৬/৭জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী খামার পাড়ায় এসে তৌমিদুং সড়কে আগে থেকে ওঁঁৎ পেতে ছিল। সকাল ৯টার সময় ইউপিডিএফ’র তিন সদস্য সাংগঠনিক কাজে বের হলে সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করতে থাকে।
এতে দু’জন কোন রকমে নিজেদেরকে রক্ষা করতে সক্ষম হলেও সন্ত্রাসীদের গুলিতে নির্মল খীসা ঘটনাস্থলে নিহত হন। হত্যাকান্ডের পর সন্ত্রাসীরা কাটাছড়ি স্বর্গপুর বনভাবনা কেন্দ্রের দিকে চলে যায় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
অপরদিকে রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের খামার পাড়ায় পিসিজেএসএস সন্তু গ্রæুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক ইউপিডিএফ সদস্য নির্মল খীসাকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার(১৬ মার্চ) বেলা ৩টার সময় ইউপিডিএফের দীঘিনালা ইউনিটের উদ্যোগে দীঘিনালা ইউনিয়নের পুকুরঘাট এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে কার্বাটি টিলা চৌরাস্তায় এসে শেষ হয় এবং সেখানে এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের দীঘিনালা ইউনিটের সংগঠক রিটেন চাকমা।
রিটেন চাকমা রাঙামাটির খামার পাড়ায় ইউপিডিএফ সদস্য নির্মল খীসাকে হত্যার নিন্দা জানিয়ে বলেন, পিসিজেএসএস সন্তু গ্রুপ খুন-খারাবির মাধ্যমে সংঘাত জিইয়ে রেখে সেনাবাহিনী ও শাসকগোষ্ঠির “ভাগ কর, শাসন কর” নীতি বাস্তবায়ন করছে। এতে প্রধান ভূমিকা পালন করছেন সন্তু লারমা। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের গদি টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর মন রক্ষায় এসব হত্যাকান্ডে তার পোষ্য সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, গত বছর জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরে অনেক আওয়ামীলীগ নেতা ও দোসরকে গ্রেফতার করা হলেও পাহাড়ের শেখ হাসিনার দোসর সন্তু লারমা দিব্যি আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারে বসে খুনের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। অন্তরবতী সরকার সন্তু লারমার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়া তো দূরের কথা উপরন্তু রাষ্ট্রীয় বাহিনীর একটি অংশ তাকে ব্যবহার করে পাহাড়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সষ্টি করছেন।
ইউপিডিএফ সংগঠক রিটেন চাকমা অবিলম্বে নির্মল খীসা’র হত্যাকারী পিসিজেএসএস সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন