পাসপোর্ট নবায়নে আবেদন খালেদা জিয়ার
বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার আবেদন নিয়ে দিনভর আলোচনার মধ্যে খালেদা জিয়ার পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “খালেদা জিয়া পাসপোর্ট নবায়নের জন্য বৃহস্পতিবার আবেদন করেছেন। নবায়ন হয়ে যাবে।“
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা নিতে বিদেশ যাওয়ার আবেদনটি এখনো আইন মন্ত্রণালয় থেকে আসেনি বলেও তিনি জানান।
খালেদা জিয়া পাসপোর্ট নবায়ন করে নতুন মেসিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী মাহবুবউদ্দিন খোকন।
তিনি বলেন, “ম্যাডামের এমআরপি পাসপোর্টের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। পাসপোর্ট রিনিউয়ের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া শেষ করে তা জমাও দেয়া হয়েছে আজ। আশা করা যায়, শিগগির তা পাওয়া যাবে।”
২০১৯ সালে খালেদা জিয়ার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
জানা গেছে, পাসপোর্ট পেলেই ভিসার প্রক্রিয়া শুরু করবে তার পরিবার।
দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে বুধবার তার পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার বুধবার রাতে ওই আবেদন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।
আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন জানিয়ে ওই দিন রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সেখান থেকে মতামত এলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তবে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার আবেদনটি তারা ‘পজিটিভলি’দেখছেন। প্রধানমন্ত্রী এসমস্ত বিষয়ে অত্যন্ত উদার এবং আমরা পজেটিভলি দেখার চেষ্টা করব অবশ্যই। পজিটিভলি দেখছি বলেই তাকে (খালেদা জিয়া) দণ্ডাদেশ স্থগিত করে চিকিৎসার সুবিধা আমরা করে দিয়েছি। যাতে উন্নত চিকিৎসা পায়, তার পছন্দমত।”
বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতির বিষয়ে জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, আবেদন পর্যালোচনার পর দ্রুত সময়ে মতামত দিয়ে ফাইল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
তবে ‘সময় শেষ হয়ে যাওয়ায়’ বৃহস্পতিবার আর সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আইন মন্ত্রণালয়ে খালেদার পরিবারের আবেদনের বিষয়ে দাপ্তরিক কাজ শেষে এদিন বিকালে মন্ত্রীর গুলশানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নথি নিয়ে যান আইন সচিব গোলাম সারওয়ার।
এরপর আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় খালেদা জিয়ার সাজা ও দণ্ডাদেশ স্থগিত করা হয়েছিল। দুটি নির্দিষ্ট শর্তে তাকে সাময়িক মুক্ত দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু এখানে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা সম্পাদন হয়ে গেছে, এরপর এটাকে আবার ওপেন করার স্কোপ আছে কিনা; সেটা দেখে আমাদের অভিমত যথাশীঘ্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিব।”
আইনমন্ত্রী আরো বলেন, যে শর্তে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করা হয়েছিল, তা শিথিলের সুযোগ আছে কিনা, তা এখন তারা দেখবেন।
বিষয়গুলো দেখার পর এ বিষয়ে মতামত দেবেন জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, “খালেদা জিয়ার বিষয়টি সরকার মানবিকভাবেই দেখছে।”
বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় বুধবার ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত মেডিকেল বোর্ড উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর সুপারিশ করে।
এরপর খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার পরিবারের পক্ষ থেকে তার বোনকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য অনুমতি দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন দেয়।
গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয়া হয়।
এরপর থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া করা বাসা ‘ফিরোজায়’ থাকছেন। গত ১৪ এপ্রিল খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন।
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন