পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহের প্রধান সামাজিক উৎসব ‘বৈ—সা—বি’ উপলক্ষে পিসিপির শুভেচ্ছা

খাগড়াছড়ি রাংগামাটি বান্দরবান পার্বত্য জেলা তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জাতিসত্তা সমূহের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বৈ—সা—বি(বৈসুক—সাংগ্রাই—বিঝু—বিষু—বিহু—চাংক্রান…) ও নববষের্র শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)।
শুক্রবার(১১ই এপ্রিল ২০২৫) পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অমল ত্রিপুরা ও সাধারণ সম্পাদক শুভাশীষ চাকমা সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক বার্তায় পার্বত্য চট্টগ্রামে ছাত্র—যুব সমাজের উদ্দেশ্যে এবং দেশবাসীকে এই শুভেচ্ছা জানান।
শুভেচ্ছা বার্তায় নেতৃদ্বয় বলেন, বৈ—সা—বি উৎসব শুধু বিনোদনের জন্য নয়, এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের মধ্যে সৌহাদ্যর্—স¤প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব ও সংহতি সুদৃঢ় করার উপলক্ষও।
বৈ—সা—বি’র চেতনায় ৮০’র দশকে সামরিক শাসনের সময় পাহাড়িরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, ’৯২—এ লোগাঙ গণহত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে পাজন(হরেকরকম সবজির মিশ্রণে রান্না তরকারি) চেঙ্গী নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল, ’৯৬ নিজস্ব সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও বিকাশের নিশ্চয়তার দাবি জানিয়ে পিসিপি, পাহাড়ি গণপরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন র্যালি করেছিল।
পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জাতিসত্তা সমূহের ঐতিহ্য সংস্কৃতি সমুন্নত রেখে ঐক্য ও সংহতি সুদৃঢ় করার আহ্বান জানিয়ে নেতৃদ্বয় বলেন, পাহাড়ি জাতিসত্তাগুলোর স্ব স্ব ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে শাসক গোষ্ঠী নানা কৌশলে পাহাড়িদের কৃষ্টি, সংস্কৃতিকে ভুলভাবে উপস্থাপন কিংবা বিকৃত করে কৃত্রিমতা সৃষ্টি করার মাধ্যমে নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করছে।
তাই স্ব স্ব জাতিসত্তার ঐতিহ্য সংস্কৃতি সমুন্নত রেখে ঐক্য ও সংহতি সুদৃঢ় করা প্রয়োজন। জাতির ঐতিহ্য—সংস্কৃতি এবং অস্তিত্ব রক্ষার্থে তরুণ প্রজন্মে ছাত্র—যুব—নারীদের এগিয়ে আসতে হবে।
নেতৃদ্বয় বৈ—সা—বি’তে বিগত দিনের সকল দুঃখ—গানি, অনৈক্য, হিংসা ও শত্রুতা ভুলে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করে নতুন বছরে নব উদ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম পরিচালনা করবে বলে পাহাড়ের সকল রাজনৈতিক দলসমূহের প্রতি প্রত্যাশা করেন।
নেতৃদ্বয় আরো বলেন, স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট হাসিনা পতনের ৮ মাস অতিক্রম করলেও পাহাড়ে দৃশ্যমান কোন পরিবর্তন ঘটেনি।
পাহাড়ে ফ্যাসিবাদের কালো থাবা এখনো রয়ে গেছে। দেশে অভ্যুত্থান পরবর্তীতে গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর’২৪ খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সেনা—সেটলার হামলায় ৪ জন নিহত হয়েছে এবং পাহাড়িদের শত শত ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে।
প্রতিনিয়ত নিষ্ঠুর রাজনৈতিক দমন—পীড়ন, খুন—ধর্ষণ এবং ভূমি বেদখলের মহোৎসব চলছে। বিগত সরকারের শাসন আমলে মিথ্যা মামলায় বম জাতিসত্তার নিরপরাধ নারী—পুরুষ ও শিশুদের কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। এখনো পার্শ্ববর্তী দেশের মিজোরামে শত শত বম শরনার্থী আশ্রিত রয়েছেন।
শুভেচ্ছা বার্তায় নেতৃদ্বয় খাগড়াছড়িতে জুনান চাকমা, রুবেল ত্রিপুরা ও ধন রঞ্জন চাকমা এবং রাঙামাটিতে অনিক চাকমা খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক বিচার, কারাগারে বন্দি নিরপরাধ বম জাতিসত্তার লোকজনসহ রাজবন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং মিজোরামে আশ্রিত বম শরণার্থীদের ফেরত আনতে অন্তবরতীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তনুময় চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন