পিরোজপুরের ইন্দুরকানি পাড়েরহাট মৎস্য বন্দরে হাজার মানুষের ঢল

পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য বন্দরটি দক্ষিণাঞ্চলের একটি অন্যতম উল্লেখযোগ্য মৎস্য বন্দর। বঙ্গোপসাগর ও স্থানীয় নদী থেকে আহরিত মাছ বিক্রির বড় পাইকারি বাজরও এটি।এখানে প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে শুরু করে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ খুচরা ও পাইকারি বিক্রয় করা হয়। এখানে মাছ ক্রয় করার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক পাইকার আসে। প্রতিদিন প্রচুর পরিমানে সামুদ্রিক মাছ দেশের উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল সহ বিভিন্ন স্থানে চালান করা হয়।

গত ৯ অক্টোর থেকে ১১অক্টোবর এই তিন দিন ধরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের আমদানিতে জমে উঠেছে পাড়েরহাট মৎস্য বন্দর। রাত থেকেই হাজারো মানুষের স্রোত। বন্দরের অধিকাংশ জায়গাই মাছ ব্যবসায়ীদের দখলে। এর মধ্যে আড়তদার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা রয়েছেন। সাগর থেকে ট্রলার বিভিন্ন মাছ নিয়ে ঘাটে ভিড়ছে। ট্রলার থেকে মাছ আড়তে নামছে আর বড় ও খুচরা ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ সেগুলো কিনে প্যাক করছেন ও ব্যাগে ভরছেন। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি ট্রলার মাছ নিয়ে ঘাটে ভিড়লেও গত ০৯ – ১১অক্টোবর ঘাটে ভিড়েছে কমপক্ষে ১৫০টি ট্রলার। এ তিন দিনে প্রায় আড়াই কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা হয়।

১২অক্টোবর (বুধবার) মধ্যরাত থেকে ২নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিয়োগ নিষিদ্ধ থাকার কারণে এ সময় সকল মাছ ধরা ট্রলার মৎস্য বন্দরে বেশি ভীড় করে।

বন্দরে মাছ কিনতে আসা চুন্নু মিয়া জানান, “অবরোধের কারনেই মানুষ মাছ কিনতে এসেছে। মাছ কিনতে এত মানুষের সমাগম ঘটবে তা ভাবতেও পারিনি।বন্দরে এসে নানা রকম বড় বড় মাছ দেখা ও কেনা হলো ভালই লাগছে।”

মৎম্য বন্দরের ট্রলার মালিক মাহবুব খান জানান,“আমার একটি ট্রলার পাঠাতে যে পরিমান টাকা খরচ হয় সে পরিমান টাকার মাছ পাওয়া যায়না বিধায় মাছের দাম বেশি রাখতে হয়। ভরা মৌমুমের শেষ মুহুর্তে নদীতে ইলিশের দেখা না পেয়ে আমরা খুব হতাশ হয়েছি।আমাদের আগামী ২২দিন ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার থেকে বিরত থাকতে হবে।”

মাছ ব্যবসায়ী মোঃ জাকির হাওলাদার বলেন “আগে সমুদ্রে যে পরিমান মাছ পাওয়া যেত তা বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই আগের চেয়ে মাছের দাম একটু বেশি”।

সীমিত আয় দিয়ে পরিবার চালাতে অনেকেই দুশ্চিন্তায় পড়লেও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির মাঝেই তারা তাজা ভাল মাছ কিনতে পেরে খুব খুশি।