পুঁজিবাজারে টাকা খুইয়ে জাল মুদ্রা তৈরির ‘গুরু’
১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে টাকা খুইয়ে দেশি-বিদেশি জাল মুদ্রা তৈরি শুরু করেছিলেন ছগির মাস্টার নামে একজন। আর তার কাছ থেকেই মুদ্রা জালের কৌশল শেখেন ঢাকার কেরানিগঞ্জে জাল রুপি তৈরির অভিযোগে গ্রেপ্তার লিয়াকত আলী।
বুধবার দিবাগত গভীর রাতে কেরানিগঞ্জের আস্তানা থেকে লিয়াকত আলী এবং খিলগাঁও থেকে তার সহযোগী জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩ এর একটি দল। আর তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্য জানতে পারে বহিনীটি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক ইমরানুল ইসলাম।
ইমরানুল ইসলাম জানান, লিয়াকত আলী ১৫ বছর ধরে জাল মুদ্রা তৈরিতে জড়িত। রাজধানীর মিরপুর এলাকার ছগির মাস্টার নামে এক জনের কাছ থেকে লিয়াকত এই কৌশল শেখেন। ছগির মাস্টার ১৯৯৬ সালে শেয়ার বাজার ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হন। পরে তিনি জাল মুদ্রা তৈরির একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন।
এ সময় লিয়াকত আলী ছগির মাস্টারের সহযোগী (সরবরাহকারী) হিসেবে কাজ করতেন। বিগত ১০ বছর ধরে লিয়াকত নিজেই অবৈধ জাল মুদ্রা তৈরীর একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে এর নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
ছগির মাস্টারের কী পরিণতি হয়েছে বা তার অবস্থান এখন কোথায়, সে বিষয়ে অবশ্য সংবাদ সম্মেলনে কিছু জানানো হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, লিয়াকত আলীর জাল টাকা তৈরির অভিযোগে এর আগেও কাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তার নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় পাঁচটি মামলা রয়েছে। আর দেশি টাকা বানালে গ্রেপ্তারের ভয়ে লিয়াকত ভারতীয় মুদ্রা বানানোর সিদ্ধান্ত নেন।
বুধবার দিবাগত গভীর রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে জাল রুপি তৈরির ‘কারখানা’র সন্ধান পায় র্যাব। শুভাঢ্যা উত্তরপাড়া, বি-ব্লক, ২৩ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলা থেকে থেকে আটক করা হয় লিয়াকত আলীকে। সেখান থেকে ১০ লাখ ভারতীয় জাল রুপি, রুপি তৈরির কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, স্ক্যানার কাম প্রিন্টার, নিরাপত্তা সুতা, ফয়েল মেশিন, উন্নতমানের রঙিন কালিসহ নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
পরে লিয়াকতের দেয়া তথ্যে রাজধানীর খিলগাঁও থেকে আটক করা হয় জাহাঙ্গীর আলমকে।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, লিয়াতক আলী প্রতি বান্ডেল ভারতীয় মুদ্রা (প্রতি বান্ডেলে এক লাখ ভারতীয় রুপি) বাংলাদেশি ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন। সরবরাহকারীরা দালালদের দিয়ে রাজধানী ঢাকার মানি এক্সচেঞ্জসহ সীমান্তবর্তী জেলায় তা বাজারজাত করত।
লিয়াকত আলীর বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার ছিটাবাড়ি গ্রামে। আর জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন