পুনরায় নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই : সিইসি
নতুন করে তফসিল দিয়ে পুনরায় নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা। নির্বাচনে নানা অনিয়ম তুলে ধরে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এ কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
তিনি বলেন, ‘আমরা আর নতুন করে নির্বাচন করব না। নতুন করে নির্বাচন করার কোনো সুযোগ নেই।’
সোমবার বেলা সাড়ে ৩টায় আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বিগত দিনের নির্বাচনের ফলাফলে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের ভোটের সংখ্যা কাছাকাছি থাকত। এমনকি হলো যে এবার ভোটের ব্যবধান এতো বেশি হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘এটা তো আমাদের দেখার কিছু নাই, বিশ্লেষণেরও কিছু নাই। ভোট তো আমরা দেইনি। জনগণই ভোট দিয়েছে।’
ঐক্যফ্রন্ট দাবি করেছে অন্তত দেড়শটি কেন্দ্রে আগের রাতেই ভোট দেয়া হয়েছে- এমন অভিযোগের ব্যাপারে সিইসি বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ অসত্য কথা।’
গতকালের নির্বাচনে লাঞ্চ বিরতির নামে ঢাকার অনেক কেন্দ্রে আর ভোটই নেয়া হয়নি। সাংবাদিকদেরও ঢুকতে দেয়া হয়নি। নির্বাচনে বিরতি দেয়া আইনের ব্যত্যয় কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা দেখতে হবে। এমনটা হওয়ার কথা নয়। বিরতিহীনভাবেই ভোট হওয়ার নিয়ম। এ ধরনের অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে দেখব।’
বিএনপি কিংবা ঐক্যফ্রন্ট যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে গেজেট প্রকাশে কোনো দেরি হবে কিনা- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘না। অভিযোগ করলে করতে পারে। তবে গেজেট প্রকাশ হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ফলাফল আসতে আরও ৪-৫ দিন সময় লাগবে। তারপরই আমরা গেজেট প্রকাশ করব।’
এ নির্বাচনে ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু গ্রহণ যোগ্যতার মাপকাঠিতে এ নির্বাচন নিয়ে আপনারা কোনো ক্ষেত্রে অতৃপ্ত কিনা- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘না। আমরা অতৃপ্ত না, তৃপ্ত। সারাদিন আপনাদের মাধ্যমেই, টেলিভিশনের মাধ্যমে নির্বাচনের অবস্থা দেখেছি। ব্যাপকভাবে অনিয়ম হয়েছে এমন কিছু আমরা পাইনি। তবে আমরা যেখানে অনিয়ম পেয়েছি সেখানে নির্বাচনই বন্ধ করে দিয়েছি। দেশি-বিদেশি কোনো গণমাধ্যমে অনিয়ম দেখতে পাইনি।’
দেশি-বিদেশি কয়েকটি গণমাধ্যমে বেশ কিছু অনিয়মের ভিডিওসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ভোটবাক্স ভর্তি, অবাধে সিল মারা, প্রধান ফটক বন্ধ করে ভেতরে ভোট নেয়া, ঢাকার অধিকাংশ আসনেই বিরোধী প্রার্থীর এজেন্টকে বের করে দেয়া, ভোটারদের ঢুকতে না দেয়া, শূন্য ভোট পাওয়া, নিজের ভোটটাও পাননি এসব উঠে আসছে। সব মিলিয়ে এ ধরনের অনিয়ম নিয়ে কমিশন লজ্জিত কিনা-জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘না। আমরা মোটেও লজ্জিত না। দুই একটা কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটে থাকলে সেটা আমরা তদন্ত করে দেখব।’
এ নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইসি সফল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
পুরো কমিশন সন্তুষ্ট কিনা-জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘হ্যাঁ। অবশ্যই পুরো কমিশন সন্তুষ্ট। কেউ তো আমাকে অসন্তুষ্টির কথা বলেননি।’
প্রসঙ্গত, রোববার অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২৯৮টি আসনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেছে। এতে ২৫৯টি আসন পেয়েছে আওয়ামী লীগ। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি (জাপা) পেয়েছে ২০টি আসন। বিএনপি পেয়েছে ৫টি আসন। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি পেয়েছে তিনটি আসন। জাসদ, বিকল্পধারা ও গণফোরাম পেয়েছে দুটি করে আসন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন