পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে জবি শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী আন্দোলন

কোটা আন্দোলনের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অষ্টম দিনের মতো ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। 

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেল চার টার দিকে কোটা বিরোধী কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে রায়সাহেব বাজার মোড়, তাঁতিবাজার মোড়, ফুলবাড়িয়া, গোলাপ শাহ মাজার হয়ে জিরো পয়েন্ট এবং সবশেষে শাহবাগে অবস্থান নেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা বার বার পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয় কিন্তু সেই বাধা উপেক্ষা করে অষ্টম দিনের মতো ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।

এ সময় তারা ‘একাত্তরের পথ ধরো, ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’, ’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

এর আগে বুধবার (১০ জুলাই) সরকারি চাকরিতে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল করে হাইকোর্টের দেয়া রায় চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। বুধবার (১০ জুলাই) বেলা ১১টায় আপিল বিভাগে শুনানি শেষে এ রায় দেন আদালত। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরতে বললেন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন,” আমরা কোটার যোক্তিক সংস্কার চাই। শুধু মাত্র অনগ্রসর ও প্রতিবন্ধী ব্যাতিত কেউ কোটায় আসতে পারে না। আমরা চাই ৫% এর উপরে সরকারী চাকরিতে কোটা না থাকুক।”

এর আগে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান কোটাপদ্ধতি সংশোধন করে পরিপত্র জারি করে। ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চের স্মারক সংশোধন করে জারি করা পরিপত্রের ভাষ্যমতে, ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধারভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে এবং ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটাপদ্ধতি বাতিল করা হলো।

ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন চাকরি প্রত্যাশী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে ওই পরিপত্র কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেয়া হয়।