পুলিশের সর্বোচ্চ পদে ব্যাপক রদবদল

বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন পদে ব্যাপক রদবদল হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে নতুন দপ্তর দেওয়া হলেও অধিকাংশকেই সরিয়ে পুলিশ অধিদপ্তর ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে এই রদবদল করা হয়েছে।

রদবদল হওয়াদের মধ্যে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়াকে পুলিশ অধিদপ্তরে, অতিরিক্ত আইজিপি মো. তওফিক মাহবুব চৌধুরীকে পিবিআই প্রধান, অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনকে খাগড়াছড়ির এপিবিএন ট্রেনিং সেন্টারে, অতিরিক্ত ডিআইজি এ এফ এম আনজুমান কালামকে সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কামরুল আহসান, আরআরএফের অতিরিক্ত ডিআইজি শাহজাদা মো. আসাদুজ্জামান, এপিবিএন-৩ এর অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাসুদ করিম, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. শওকত আলী, এপিবিএন-৭ এর অতিরিক্ত ডিআইজি খো. ফরিদুল ইসলাম এবং সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি সৈয়দ হারুন অর রশীদকে সরিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে পৃথক এক আদেশে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলামকে সরিয়ে পুলিশ অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া রেলওয়ে পুলিশের ডিআইজি মো. শাহ আলমকে এসবি প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

১২ পুলিশ সুপারকে আনা হলো ডিএমপিতে

বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার ১২ কর্মকর্তাকে ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

এ ছাড়া পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ১৬ জনকে বিভিন্ন রেঞ্জে পুলিশ সুপার ও একজনকে ডিএমপি অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে তাদের বদলি করা হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মাহাবুর রহমান শেখ স্বাক্ষরিত আদেশে এ বদলি করা হয়।

ডিএমপিতে উপকমিশনার হিসেবে বদলি হওয়া ১২ কর্মকর্তা হলেন- রাজশাহীর সারদা বিপিএর পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ, ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার ও সুপারনিউমারারি অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত খোন্দকার নজমুল হাসান, এসবি ঢাকার পুলিশ সুপার ও সুপারনিউমারারি অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূইয়া, পুলিশ স্টাফ কলেজের পুলিশ সুপার ও সুপারনিউমারারি অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত সুফিয়ান আহমেদ, খুলনা পিটিসির পুলিশ সুপার মো. ইসরাইল হাওলাদার, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) উপকমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, রংপুর পিটিসির পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম, সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রিয়াজুল হক, পুলিশ টেলিকম ঢাকার পুলিশ সুপার মো. শাহরিয়ার আলী, নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান, সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রওনক জাহান ও পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার রওনক আলম।

এ ছাড়া এসবি ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সুপারনিউমারারি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনকে অতিরিক্তি উপকমিশনার হিসেবে ডিএমপিতে বদলি করা হয়েছে।

বাধ্যতামূলক অবসরে রংপুরের ঊর্ধ্বতন দুই পুলিশ কর্মকর্তা

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের হত্যার সময় দায়িত্বে থাকা রংপুরের ঊর্ধ্বতন দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন- রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান ও রংপুর রেঞ্জের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. আব্দুল বাতেন।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পৃথক দুইটি প্রজ্ঞাপনে এই দুই কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের জননিরপত্তা বিভাগের পুলিশ শাখা-১ এর সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রজ্ঞাপন দুইটিতে স্বাক্ষর করেন।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে অবসরে পাঠানোর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের সদস্য ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানকে সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হলো।

জনস্বার্থে এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।

অন্যদিকে, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি মো.আব্দুল বাতেনকেও ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হলো বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়।

এর আগে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে নানামুখী চাপে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন ও পুলিশ কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে সাসপেন্ড (সাময়িক বরখাস্ত) করে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।