পুলিশ থেকে বাঁচতে বরের ভাবি হলেন কনে!

ঠাকুরগাঁওয়ে বাল্যবিয়ের অভিযোগে প্রশাসনের অভিযানের মুখে পড়েছিল বরযাত্রীরা। একপর্যায়ে কনেকে বাদ দিয়ে বরের ভাবিকে কনে হিসেবে সাজানো হয়। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে পারেনি তারা।

বাল্যবিয়ের অপরাধে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হলে জেরার মুখে বরের ভাবি স্বীকার করেন, পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে তাকে কনে হিসেবে সাজিয়ে প্রশাসনের সামনে উপস্থিত করানো হয়েছে।

জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারী সরকারপাড়া গ্রামে সোমবার বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে প্রশাসন অভিযান চালালে এ নাটকীয় ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারী সরকারপাড়া গ্রামের আবদুল লতিফের সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্রী রুমা বেগমের (১৩) সঙ্গে একই উপজেলার বড়গোছিয়া গ্রামের জয়েন উদ্দিনের ছেলে জমির আলীর বিয়ে সম্পন্ন হয়।

কনে নাবালিকা এমন অভিযোগে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবদুল মান্নান পুলিশ নিয়ে কনের বাড়িতে উপস্থিত হন। পুলিশ ও ইউএনও’র উপস্থিতি টের পেয়ে বর কনেকে ফেলে গাড়ি নিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের আটক করা হয়।

এদিকে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা বাল্যবিয়ের অভিযোগ তুললে বরপক্ষ বিয়ের কনেকে বাদ দিয়ে বরের ভাবিকে কনে হিসেবে সাজিয়ে তাদের সামনে উপস্থাপন করে। কিন্তু বিষয়টি সন্দেহজনক হলে বর ও কনেপক্ষকে ওই সাজানো কনেসহ ইউএনও অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে ইউএনও আব্দুল মান্নান বরপক্ষকে একটি রুমে আটকে কনেকে জেরা করেন। একপর্যায়ে সাজানো কনে স্বীকার করেন, তিনি বরের ভাবি। প্রশাসনের হাত থেকে বাঁচতে তারা এমন কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন।

উভয়পক্ষের ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বিয়ে আয়োজনকারীদের সতর্ক করে এবং মুচলেকা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বড় পলাশবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের জিম্মায় বরপক্ষকে ও আমজানখোর ইউপি চেয়ারম্যান আকালুর জিম্মায় কনেপক্ষকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল মান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।