পূর্ণাঙ্গ রায়ের আগে ফাঁসি নয় : আপিল বিভাগ
কুষ্টিয়ায় শিশু অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শুকুর আলীর রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া বাতিল করতে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন) এবং কারা কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন আদালত। এমন পরিস্থিতিতে একটি অভিমতও দিয়েছেন হাইকোর্টের আপিল বিভাগ। পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার আগে যাতে ফাঁসি কার্যকর না করা হয়, সে জন্য আইজি প্রিজনসের সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেলকে কথা বলতে বলেছেন আপিল বিভাগ।
রোববার (০৭ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আপিল বিভাগ এ অভিমত দেন।
এক মামলায় আপিল বিভাগের রায়ের পর এক আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, অথচ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়নি-বিষয়টি আপিল বিভাগের নজরে আনেন ওই দণ্ডিত ব্যক্তির আইনজীবী। পরে আদালত ওই কথা বলেন।
আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন একটি মামলা মেনশন করার কথা বলেন। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘হ্যাংগিংয়ের (ফাঁসি) মামলা নিয়ে কত সমালোচনা হচ্ছে। ২০০৬ সালের মামলা শুনতে লিস্টে নিয়ে এসেছি। ২০০৬, ২০০৭ ও ২০০৮ সালের মামলাগুলোর পর ২০১৫ সালেরগুলো প্রায় শেষ করেছিলাম। এখন দেখা যায়, ২০১৩ সালের কিছু বাকি রয়েছে।’
একপর্যায়ে আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘আসামিকে ফাঁসি দেওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছে। অ্যাডভান্স অর্ডারের কারণে তাকে ফাঁসি দিতে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়নি। রিভিউ আবেদন করা হবে, সে পর্যন্ত ফাঁসি যাতে না দেওয়া হয়। আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
হেলাল উদ্দিন মোল্লা আরও বলেন, ৩ আসামিকে যাবজ্জীবন ও ১ জনের ফাঁসি বহাল রাখা হয়েছিল, ১৮ আগস্ট ওই রায় দেওয়া হয়।
আদালত বলেন, আবেদন করেছেন? তখন আইনজীবী বলেন, ‘ওকালতনামা পাইনি। ডিসির মাধ্যমে এখন ওকালতনামা পেতে ১০ দিন লাগে। অ্যাডভান্স অর্ডারের জন্য আসামির প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়েছে। এখনো রায়ে সই হয়নি।’
বেঞ্চের একজন বিচারপতি বলেন, অ্যাডভান্স অর্ডার দেওয়া হয়েছে যাদের মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন হয়েছে, তাদের নরমাল সেলে দেওয়ার জন্য। ওই রায় (আপিল বিভাগ) এখনো সই হয়নি।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, ফাঁসির জন্য আদালত অ্যাডভান্স অর্ডার পাঠাননি।
হেলাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, অথচ পুরো অর্ডার চলে গেছে। কুষ্টিয়ার বিচারিক আদালতে গেছে। সেখান থেকে দণ্ড কার্যকরের জন্য কাশিমপুর কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, পুরো রায় পাওয়ার আগে তো হবে (দণ্ড কার্যকর) না।
পরে প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি আইজি প্রিজনসকে বলবেন পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার আগে যাতে দণ্ড কার্যকর করা না হয়।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী চেম্বার বিচারপতির কাছে আবেদন দিতে বলেন প্রধান বিচারপতি।
এই পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, জেনারেলি একটি কথা বলতে পারেন আইজি প্রিজনসকে রায় সবার চূড়ান্ত স্বাক্ষরের আগে পূর্ণাঙ্গ নয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন