‘পৃথিবীর সব দেশের রাজধানীতে যানজটের সমস্যা রয়েছে’

পৃথিবীর সব দেশের রাজধানী শহরেই যানজটের সমস্যা রয়েছে। যানজট সমস্যা সমাধান ও সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা, প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।

পথচারীদের রাস্তায় চলাচলে সচেতন হতে ও আইন মানার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আক্ষেপের সুরে বলেছেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা এত বড় একটি আন্দোলনের পরও মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়নি।

বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সদস্য বেগম নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে এসক কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের নিরাপদ সড়ক-সংক্রান্ত ৯ দফা দাবির অধিকাংশই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বিলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে, যা সংসদের চলতি অধিবেশনে উপস্থাপিত ও বিবেচিত হবে। এ আইনে অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া ঘাতক বাস দুটি চালক, হেলপার, মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনের আওতায় কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এবং সড়ক নিরাপত্তায় উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। চার বছর মেয়াদী ন্যাশনাল রোড সেইফটি এ্যাকশান প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের ১২১টি দুর্ঘটনা প্রবণ স্থানে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ৩৭৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ৪ হাজার ৩৬৭ কিলোমিটার ফ্লাইওভার এবং ওভারপাস নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।

তিনি বলেন, ফিটনেসবিহীন যানবাহন পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। গত ১৮ আগস্ট পর্যন্ত ট্রাফিক সপ্তাহ চলাকালে সারাদেশে ২ লাখ ৭৭৯টি যানবাহন ও ৮১ হাজার ৪৬৮ জন চালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রাজধানীর যানজট নিরসনে সরকার এলিভেটেড এক্সপ্রেস সড়ক র্নিমাণসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, মহাসড়কে বাসের সর্বোচ্চ গতি ৮০ ও ট্রাকের সবোর্চ্চ গতি ৬০ কিলোমিটার এবং অতিরিক্ত ওজন সীমার যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে এলেক্স রোড কন্ট্রোল স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে এবং মহাসড়কের পাশে বিশ্রামাগার স্থাপন করা হবে।

এ প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী ট্রাফিক আইন মেনে চলার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, নিরাপদ সড়কের জন্য যতই ব্যবস্থা নেই না কেন, দেশের মানুষের মানষিকতা পরিবর্তন না হলে কিছুই হবে না। অনেকেই ফুটওভার ব্রিজ কিংবা আন্ডারপাস ব্যবহার না করে ছোট শিশুকে নিয়ে চলন্ত গাড়ির মধ্যে দিয়েই রাস্তা পারাপার হতে দেখা যায়। এ সময় দ্রুত যানবাহন কীভাবে হঠাৎ করে থামবে? সে বিষয়টিও দেখতে হবে। এ কারণেই দুর্ঘটনা হয়। এখানে ড্রাইভারের দোষ কতটুকু আর ট্রাফিক আইন না মেনে যিনি ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছেন তার দোষ কতটুকু-তাও বিবেচনায় আনা দরকার।