প্রতিটি জেলার এসপির হাতেই উঠছে পুলিশ পদক
পুলিশ সপ্তাহে দেশের প্রতিটি জেলার পুলিশ সুপারই পুরস্কৃত হচ্ছেন। এই ঘটনাটি ইতিহাসের প্রথমবারের মতো ঘটতে যাচ্ছে। দেশের ১৪টি র্যাব ব্যাটালিয়নের অধিনায়করাও পাচ্ছেন পুরস্কার।
সেবা, সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য পুলিশ সপ্তাহে পদক দেওয়া হয় যা বিপিএম এবং পিপিএম নামে পরিচিত। প্রথমটি বাংলাদেশ পুলিশ পদক এবং পরেরটি রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক।
এবার এই দুই পদক দেওয়া হচ্ছে রেকর্ডসংখ্যক, ৩৪৯ জনকে। গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণ ছাড়াও ‘সুষ্ঠুভাবে’ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করায় বেড়েছে পদকের সংখ্যা। এসপি ও র্যাব অধিনায়করাও একই কারণে পাচ্ছেন এই পুরস্কার।
আগামীকাল রাজধানীর রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের হাতে এই পদক তুলে দেবেন।
এবার পদক পাচ্ছেন মোট ৩৪৯ জন। সব জেলার এসপি এবং প্রতিটি র্যাব ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের পাশাপাশি পদকপ্রাপ্তির এই সংখ্যাটিও রেকর্ড। গত বছর বিপিএম সাহসিকতা ও সেবা এবং পিপিএম সাহসিকতা ও সেবা শাখায় ১৮২ জন জনকে পদক দেওয়া হয়।
এবার বিপিএম সাহসিকতা পাচ্ছেন ৪০ জন, বিপিএম সেবা পাচ্ছেন ১০৪ জন। পিপিএম সাহসিকতা পাচ্ছেন ৬২ জন, আর পিপিএম সেবা পাচ্ছেন ১৪৩ জন। দুজন পাচ্ছেন মরণোত্তর পদক। এরা হলেন পরিদর্শক জালাল উদ্দিন ও কনস্টেবল শামীম মিয়া।
পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি কমিটি এই তালিকা চূড়ান্ত করেছে। কার কী অবদান সেটি এখনো প্রকাশ করেনি পুলিশ। এটি পদক দেওয়ার সময় পুস্তিকাতে লেখা থাকবে।
সব এসপি এবং র্যাব ব্যাটালিয়নের প্রধানের পুরস্কারপ্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক মীর সোহেল রানা বলেন, ‘সেবা, সাহসিকতা এবং বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।’
৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এমন প্রশ্নে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘যদি এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এই বিষয়গুলো (সেবা, সাহসিকতা, বীরত্ব) আসে, তাহলে অবশ্যই তার জন্যও পাবে।’
শীর্ষ কর্মকর্তা যারা পদক পাচ্ছেন
পুলিশ সদর দপ্তরের নথি অনুযায়ী বিপিএম পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি আবুল কাহার আকন্দ, সোয়াটের সিনিয়র সহকারী কমিশনার এসএম জাহাঙ্গীর হাছান।
বিপিএম সেবা পদক যারা পাচ্ছেন তাদের মধ্যে আছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইয়ের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, ডিবির যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন, যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) শেখ নাজমুল আলম, র্যাব-১ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম, ডিএমপির রমনা বিভাগের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার, নারায়ণগঞ্জের এসপি হারুন অর রশিদ, কিশোরগঞ্জের মাশরুকুর রহমান খালেদ, ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকারসহ ১০৪ জন।
পিপিএম পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন র্যাব-১৫ এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমদ, ডিবির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম সাকলায়েন, সোয়াটের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহবুব-উর-রশীদ।
পিপিএম সেবা পদক পেয়েছেন এসবির ডিআইজি মাহবুব হোসেন, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহম্মদ, পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি হাবিবুর রহমান, ডিএমপির উত্তরার ডিসি নাবিদ কামাল শৈবাল, রাজবাড়ীর এসপি আসমা সিদ্দিকা মিলি।
দেশের সব মহানগর পুলিশের অপরাধ বিভাগের উপকমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এই পদকের তালিকায় রয়েছেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, কর্মকর্তাদের সারা বছরের কাজ বিবেচনা করেই পদক দেওয়া হয়। শুধু জাতীয় নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের জন্য এ পুরস্কার- বিষয়টি এমন নয়।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন