‘প্রধানমন্ত্রী ভবনে থাকব না, পাকিস্তান চলবে মদিনা আদর্শে’
পাকিস্তানের একাদশ সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দল (পিটিআই)।বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খান বলেন, ‘২২ বছর সংগ্রামের পর পাকিস্তান নিয়ে আমার স্বপ্নপূরণ হতে চলায় আল্লাহকে ধন্যবাদ। এতদিন যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমি নির্বাচনে এসেছিলাম, তা আমি এখন পূরণ করার সুযোগ পেয়েছি।’
পাকিস্তানের সামা টিভি জানায়, দরিদ্র ও এতিমদের জন্য ওয়েলফেয়ার সিস্টেম বা দাতব্যমূলক ব্যবস্থা চালু করা শহর পবিত্র মদিনাকে তার অনুপ্রেরণা বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিহিত করেন ইমরান খান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমাজ এটার পুরো বিপরীত। আমরা মদিনা রাষ্ট্রের আদর্শ অনুযায়ী পাকিস্তান চালাব।’
এ সময় গরিব ও দুর্বল, যারা সারাদিন কঠোর পরিশ্রমের পরও বাচ্চাদের খাবার দিতে পারে না তাদের জন্য কাজ করার আশা প্রকাশ করেন বিশ্বকাপ জয়ী এই অধিনায়ক।
‘একটা দেশের গরিব মানুষ কিভাবে বাঁচে, তাই দিয়ে সেই দেশটি পরিচিতি লাভ করে,’ মন্তব্য করেন তিনি।
নির্বাচনে নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকারও প্রশংসা করেন ইমরান খান। এছাড়া দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার কথাও বলেন তিনি।
ইমরান খান বলেন, ‘সবার আগে আমি এবং আমার মন্ত্রিসভা হবে সবার নির্ভরযোগ্যতার স্থান।’
প্রবাসীদের দেশটির সবচেয়ে বড় সম্পদ উল্লেখ করে তিনি বিদেশে বসবাসরত পাকিস্তানিদের সেখানে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে কাজ করবেন বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতির কারণে তারা পাকিস্তানে বিনিয়োগ করতে চায় না।’
দেশটির সম্ভাব্য এই প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর জন্য যে বাসভবন, সেখানে থাকবেন না তিনি, ‘আমাদের সরকার ঠিক করবে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন কি কাজে ব্যবহার করা হবে। এটা জনগণের কাজে ব্যবহার করা উচিত।’
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনকে হোটেলে রূপান্তরিত করা হতে পারে। ইমরান খান মনে করেন, সব সরকারি অবকাশ যাপন কেন্দ্র ভাড়া দেয়া হলে সেগুলো থেকে আয় হবে।
চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডরের (সিপেক) মাধ্যমে পাকিস্তানে আরও বিদেশি বিনিয়োগ আনারও ইচ্ছাও প্রকাশ করেন ইমরান।
‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে’ আফগানিস্তানের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে ইমরান বলেন, ‘তাদের শান্তি প্রয়োজন। পাকিস্তানের শান্তি নির্ভর করছে একটি শান্ত আফগানিস্তানের ওপর।’
পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা পাকিস্তানের ক্ষতি করছে বলেও মনে করেন তিনি, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক চাই। আমরা মধ্যপ্রাচ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে চাই।’
ইমরান খান বলেন, ‘আমি সেই বিরল পাকিস্তানিদের একজন, যে পুরো ভারত ঘুরে দেখেছেন। কিন্তু, ভারতীয় মিডিয়ায় আমাকে খলনায়ক হিসেবে চিত্রিত করায় ব্যথিত হয়েছি।’
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে কাশ্মীরই প্রধান আলোচ্য বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখানকার মানুষ অনেক কষ্ট ভোগ করেছে। ভারত ও পাকিস্তানের উচিৎ আলোচনায় বসা। ভারতের নেতারা প্রস্তুত থাকলে, আমরাও আলোচনার জন্য প্রস্তুত।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন