প্রফেসর ড. সৈয়দ মাকসুদুর রহমান: অনুজদের জন্য অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব

স্বাধীন বাংলাদেশের ইসলামি শিক্ষা প্রচার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে গ্রন্থ রচনা ও গবেষণার কাজ করে যাচ্ছেন।তাঁর তত্ত্বাবধানে এইচ আইভি ভাইরাস:ধর্মীয় ভূমিকা এবং পথ শিশুদের অধিকার:ইসলামী দৃষ্টিকোণ,মুক্ত বাজার অর্থনীতি ইসলামী দৃষ্টিকোণ এ রকম অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে।আগামী প্রজন্মকে উত্সাহ প্রদানের জন্য তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অবদান আলোচনা করা হলো।

নাম:
সৈয়দ মাকসুদুর রহমান ইবনু সৈয়দ আনছার আলী ইবনু সৈয়দ জুলফিকার আলী

জম্ম:
১লা জানুয়ারী ১৯৭৪ সালে যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার বাশুয়াড়ী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। বাবা সৈয়দ আনছার আলী ও খন্দকার সালেহা বেগমের কনিষ্ঠ পুত্র।

শিক্ষা জীবন:
তিনি বাশুয়াড়ী প্রাথমিক ও পরবর্তীতে বাশুয়াড়ী সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম বোর্ডবৃত্তি সহ কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া’র ধর্মতত্ত্ব ও ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের আল-হাদীস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, থেকে অনার্স ও মাস্টার্স উভয় পরিক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে রেকর্ড সংখ্ক নম্বর পেয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথমস্থান অধিকার করেন।

পুরস্কার গ্রহণ:
তিনি মাদ্রাসা শিক্ষা বিভিন্ন স্তরে মেধা তালিকায় বৃত্তি প্রাপ্ত হন।এ ছাড়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদিস এণ্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে অনার্স পরীক্ষায় ফ্যাকাল্টি ফাস্ট হয়ে University grant comition থেকে অনুয়দীয় প্রথম বৃত্তি প্রাপ্ত হন। মাস্টার্স পরীক্ষায় একই বিভাগে অনুষদীয় প্রথম হন এবং মেধার স্বীকৃতি স্বরূপ মাননীয় “চ্যান্সেলর স্বর্ণ পদ“ প্রাপ্ত হন।

কর্ম জীবন:
তিনি ২০০১ সালে একই বিভাগে বিশ্ববিদ্যালয়ে আল-হাদীস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৩ সালে সহকারী অধ্যাপক এবং ২০০৮ সালে সহযোগী অধ্যাপকে উন্নীত হন।২০১৩ সাল হতে তিনি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। বর্তমান তিনি একই বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। ইতোমধ্যে তিনি এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। তার থিসিসের শিরোনাম যথাক্রমে – “মাওলানা মুহাম্মদ আলী শাহ ইরানী: ইসলাম প্রচারে তার অবদান” ও আল্লামা ইউসুফ বিননুরী: ইলমুল হাদীসে তার অবদান”। তার তত্ত্বাবধানে এ পর্যন্ত দশের অধিক এমফিল ও তিনটি পিএইচডি ডিগ্রী সম্পন্ন হয়েছে এবং একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তার মধ্যে প্রসিদ্ধ হলো-
*আল্লামা ইউসূফ বিন্ নূরী (রহ) : ইলমুল হাদীসে তাঁর অবদান।
* যাকাত ব্যবস্থাপনা : বাংলাদেশে দারিদ্র বিমোচন ও উন্নয়ন । তিনি “বিশ্বের ধর্ম পরিচিত’’ গ্রন্থের রিভোয়ার হিসেবে মতামত লিখেছেন।

এছাড়া বহিস্ত সদস্য হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর পরীক্ষক হিসেবে ডিগ্রি প্রদান করেছেন। এ ছাড়া অসংখ্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সপার্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও লালন শাহ হলের সহকারী প্রভোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালক করেন।

দেশ ভ্রমণ:
তিনি পাকিস্তান, ভারত, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপ সফর করেন।

গবেষণা কর্ম:
তার প্রবন্ধের সংখ্যা দুই শতাধিক যা দেশি বিদেশি অনেক গবেষণা জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি সম সাময়িক অনেক মিডিয়ায় মতামত পদান করেছেন। তিনি বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান থেকে অসংখ্য সম্মাননা পদক পেয়েছেন।

এ ছাড়া তিনি আর্তমানবতার সেবায় অনেক অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন।

বর্তমান তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পবেষনা চালিয়ে যাচ্ছেন। ছাত্রদের উদ্দেশ্য তার অভিমত ব্যক্ত করেছেন এ প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক মেধাবী। তারা যদি নৈতিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে দক্ষতা অর্জন করে তবে কোন ক্ষেত্রে তাদের পিছিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। সামাজিক বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সামাজিকভাবে সম্মানের সাথে জীবন যাপন করতে হবে। সামাজিক দায়বদ্ধতা সবাইকে একযোগে নিতে হবে তাহলে একটি সূখী ও সূখী সমাজ উপহার দেওয়া সম্ভব হবে। তিনি যে কোন বিপদে আল্লাহ তাআলা উপর নির্ভর ও ধৈর্য ধারন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন। আল্লাহ তাআলা তাকে আরো বেশি খেদমত করার তাওফীক দান করুন, আমীন।

লেখক:
মাওলানা জিয়াউল ইসলাম যুক্তিবাদী
ইসলামী বক্তা, লেখক ও গবেষক
কলারোয়া, সাতক্ষীরা।