প্রশ্ন ফাঁস: ধরা পড়া চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুই মামলা
এসএসসি পরীক্ষার তৃতীয় দিন ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষা শুরুর আগে আগে কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টার সময় ফরিদপুরে বোয়ালমারীতে ধরা পড়া চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করা হয়েছে।
চার শিক্ষককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি দুই কেন্দ্রে দায়িত্ব প্রাপ্ত হল সুপারদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষা শুরু পরপরই বোয়ালমারীর দুই কেন্দ্রের চার শিক্ষককে বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টার অভিযোগ উঠে। ঘটনার সত্যতা পেয়ে তাদের তাদের আটক করে স্থানীয় প্রশাসন।
গ্রেপ্তার শিক্ষকরা হলেন, প্লাবন ঘোষ, রইচ উদ্দিন, সালমান মাহমুদ এবং শাহিন ফকির।
গত কয়েক বছর ধরেই প্রশ্ন ফাঁস একটি আলোচিত বিষয়। নানা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার পরও সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো যাচ্ছে না। অভিযোগ আছে ট্রেজারি থেকে প্রশ্ন কেন্দ্রে পাঠানোর সময় বা কেন্দ্র থেকেও ফাঁস হয় প্রশ্ন। আর এতে শিক্ষকদের একাংশের জড়িত থাকার অভিযোগও করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন ১ ফেব্রুয়ারি বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্ন ফেসবুকে এসেছে পরীক্ষা শুরুর ২৪ মিনিট আগে। ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলা দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন এসেছে পরীক্ষা শুরুর পৌনে এক ঘণ্টা আগে।
পরদিন প্রশ্ন ফাঁস বিষয়ে তদন্ত কমিটি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি প্রশ্ন ফাঁসকারীদের ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
তবে পরদিনই সামাজিক মাধ্যম হোয়াটস অ্যাপে ইংরেজি প্রথম পত্রের প্রশ্ন এসেছে পরীক্ষা শুরুর দুই ঘণ্টা আগে। আর এদিনই ফরিদপুরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ধরা পড়েন চার শিক্ষক।
সামাজিক মাধ্যমগুলোতে যারা প্রশ্ন ফাঁস করছে তারা এর বিনিময়ে কোনো টাকাই চাইছে না বা চাইলেও সেটা ২০০, ৩০০ টাকার মতো নগণ্য পরিমাণে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে বাণিজ্যির উদ্দেশ্য নেই এর পেছনে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, সরকারের বদনাম করতে এই কাজটি করছে একটি চক্র। এর পেছনে রাজনৈতিক কারণ জড়িত বলেও অভিযোগ তার। এবার পরীক্ষা শুরুর আগেই তিনি প্রশ্ন ফাঁসে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। পরীক্ষা শুরুর দিন কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কেউ প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকলে তার যে কী পরিণতি হবে, সেটি তিনি নিজেও জানেন না।
এই পরিস্থিতিতে ফরিদপুরে চার শিক্ষক আটকের বিষয়টি প্রশাসনে তোলপাড় হয়েছে। বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রওশন আরা পলি বলেন, ‘এসএসসির প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত অভিযোগ চার শিক্ষককের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা হয়েছে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে বিভাগী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
‘মামলা ছাড়াও দুই কেন্দ্রের মধ্যে জর্জ একাডেমির হল সুপার ইয়াকুব আলী এবং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের হল সুপার এটিএম চুন্নু মিয়াকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, জর্জ একাডেমি কেন্দ্রে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় হল পরিদর্শক সুদীপ বিশ্বাস বাদী হয়ে প্লাবন ঘোষ ও শাহিন ফকির এবং সরকারি বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের হল পরিদর্শক আব্দুর রহিম বাদী হয়ে রইচ উদ্দিন ও সালমান মাহমুদের নামে মামলা করেন।
দুইটি মামলাই ‘পাবলিক পরীক্ষা অপরাধ আইন ১৯৮০’ সালের ধারা মোতাবেক হয়েছে বলেও জানান ওসি মিজানুর রহমান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন