প্রার্থী যেই হোক ভোট দেব ধানের শীষে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-৩ (বদলগাছী-মহাদেবপুর) আসনে ভোট নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিল বিএনপি। ব্যক্তির চেয়ে দল বড় নাকি দলের চেয়ে ব্যক্তি বড় এ প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিল দলীয় নেতাকর্মীরা।
এ অবস্থায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিলেন, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। কাজেই দলের প্রার্থী যেই হোক ধানের শীষেই ভোট দেবেন তারা।
জানা যায়, এ আসনে তৃণমূলের প্রার্থী ফজলে হুদা বাবুলকে মূল্যায়ন না করে সাবেক ডেপুটি স্পিকারের ছেলে পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীকে মনোনয়ন দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। ফলে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
কারণ দলের সংকটকালে ফজলে হুদা বাবুল স্থানীয় বিএনপির হাল ধরেন। গত ১০ বছর তার নেতৃত্বে বিএনপি এখনো সুসংগঠিত। একাদশ নির্বাচনে ফজলে হুদা বাবুল ধানের শীষের প্রতীক পাবেন এমনটি আশা ছিল নেতাকর্মীদের।
কিন্তু অজানা কারণে দলের নীতি-নির্ধারকরা বাবুলকে মনোনয়ন দেয়নি। ফলে মর্মাহত হন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। ভুল নেতাকে মনোনয়ন দেয়ায় কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের ধিক্কার জানান তারা। একই সঙ্গে ফজলে হুদা বাবুলের নেতৃত্বে দলীয় প্রার্থীর হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
শনিবার দুপুরে বদলগাছী থানা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে থানা বিএনপির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুলের সভাপতিত্বে জরুরি এক সভায় এ অঙ্গীকার করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
এতে বক্তব্য রাখেন- থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাদী চৌধুরী টিপু, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সহ-সভাপতি মোস্তফা অলি আহমেদ রুমি চৌধুরী, সহ-সভাপতি আব্দুল আজিজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকিতুল্লাহ সরদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আধাইপুর ইউপির চেয়ারম্যান জাকির হোসেন চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান কেটু, রেজাউন নবী সান্ডো, মহিলা দলের আহ্বায়ক শাম্মী আক্তার, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইদুল ইসলাম পিন্টু, সদস্য সচিব নান্নুর রহমান, বদলগাছী বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি নান্নুর রশিদ খাঁন প্রমুখ। এ সময় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাদী টিপু চৌধুরী বলেন, আমরা আজ কত দুঃখের মধ্যে আছি তা বলে প্রকাশ করার মতো নয়। অনেকদিন পর একটা ভালো নির্বাচন করতে পারব ভেবেছিলাম। কিন্তু তা হলো না। কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রতি আমাদের ঘৃণা। আবার ৫ বছর কষ্ট করতে হবে আমাদের। কিন্তু এমন একজনকে ধানের শীষের টিকিট দেয়া হয়েছে যার জন্য ভোট চাওয়া মুশকিল। তবে প্রার্থী যেই হোক না কেন এ আসনে ভোট হবে ফজলে হুদার নেতৃত্বে। তারই নেতৃত্বে আমরা ধানের শীষে ভোট দেব।
বদলগাছী থানা বিএনপির সহ-সভাপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা অলি আহমেদ রুমি চৌধুরী বলেন, গত ১০ বছর ধরে এ সংগঠনকে আমরা গড়ে তুলেছি এবং সুসংগঠিত করেছি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে ফজলে হুদা বাবুল নির্বাচন করবেন, এটা বাস্তবায়নের অপেক্ষায় ছিলাম। প্রত্যেক নির্বাচনে আমাদের ওপর বৈরী আচরণ করা হয়। অযোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়ে আমাদের ঘাড়ে দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়া হয়। কেন্দ্র থেকে এ সিদ্ধান্ত যারা নিয়েছেন তারা দলের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ধিক্কার তাদের। এ সিদ্ধান্ত খালেদা জিয়ার বিপক্ষে নেয়া হয়েছে। যদি খালেদা জিয়া বাইরে থাকতেন তাহলে বাধ্য করতাম ফজলে হুদাকে স্বতন্ত্র থেকে দাঁড়াতে। কিন্তু আজ দলের যে অবস্থা তাতে দলের প্রার্থীকে প্রত্যাখ্যান করার সময় নেই। কাজেই প্রার্থী যেই হোক আমরা ফজলে হুদার নেতৃত্বে ধানের শীষে ভোট দেব। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন।
বদলগাছী থানা বিএনপির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল বলেন, আমি মনোনীত হতে পারিনি এ দায়ভার আমার। যতটা না বেশি এমপি হতে এসেছি, তার চেয়ে বেশি রাজনীতিবিদ ও নেতা হতে এসেছি। আমরা ম্যাডাম খালেদা জিয়ার বাইরে যেতে পারব না। কাজেই দলীয় প্রার্থীর ভোট করব আমরা। আমি আগে যেমন আপনাদের পাশে ছিলাম, আগামীতেও থাকব।
এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের ছলিম উদ্দীন তরফদার সেলিম এমপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা সেকেন্দার আলী নির্বাচন করছেন। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়বেন বিএনপি প্রার্থী পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন