প্রিয়াঙ্কাকে কাছে পেয়ে আনন্দে মেতে উঠলো তারা
রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অন্যতম স্থান কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের হারিখালী এলাকা পরিদর্শন করেছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ইউসিফের শুভেচ্ছাদূত প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাকে নিয়ে হারিয়াখালী যায় ইউনিসেফ দল। রয়েল টিউলিপ হোটেল থেকে মেরিন ড্রাইভ হয়ে ইউসিফের গাড়িযোগে হারিখালী ভাঙা নামক সীমান্তে পৌঁছান তারা।
রোহিঙ্গারা যে পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে ভাঙার সেই স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। গাড়ি থেকে নেমে সেই পথে তিনি কিছু সময় হাঁটাহাঁটি করেন। সেখান থেকে নাফ নদী আর মিয়ানমার দেখা যায়।
সেখান থেকে চলে আসার সময় মসজিদের সামনে গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ১৫ জন রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন প্রিয়াঙ্কা। এ সময় রোহিঙ্গা শিশুদের খোঁজ-খবর নেন তিনি।
এ সময় রোহিঙ্গা শিশুরা প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে দেখে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। প্রিয়াঙ্কা চোপড়াও তাদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলেন। শিশুদের সঙ্গে তিনি বাংলা ও হিন্দিতে কথা বলেন। তাদের পড়াশোনার খোঁজ-খবর নেন।
প্রিয়াঙ্কাকে দেখতে কিছুক্ষণ পরপর ছুটে আসে রোহিঙ্গা শিশুরা। এ সময় প্রিয়াঙ্কা তাদের সঙ্গে কথা বলেন। শিশুরা খেলাধুলা করছে- সেটি মুগ্ধ হয়ে দেখেন প্রিয়াঙ্কা। পরে শিশুদের সঙ্গে হাসি-খুশিতে মেতে ওঠেন তিনি। পাশপাশি তাদের সঙ্গে ছবি তুলেন। ফেরার পথে শিশুদের প্রিয়াঙ্কা বলে যান, ‘ফির মিলেঙ্গে’ (আবার দেখা হবে)।
এখান থেকে গাড়িতে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে টেকনাফের নেটং (উটনি) পাহাড়ের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। এই পথে নাফ নদী দিয়ে মিয়ানমার থেকে কীভাবে রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করছে তা প্রিয়াঙ্কার সামনে তুলে ধরা হয়। এখানে ১৫ মিনিট অবস্থান করেন তিনি।
এরপর টেকনাফের লেদা বিজিবি চৌকির কাছে ইউনিসেফ পরিচালিত শিশুদের খেলাধুলার জন্য তৈরি স্থান পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে বেলা ১১টার দিকে তিনি টেকনাফের লেদা মেকসিফট সেটেলমেন্ট ক্যাম্পে যাওয়ার কথা থাকলেও গাড়ি থেকে তা দেখতে দেখতে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলে যান।
সেখানে তিনি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। রোহিঙ্গা বেশ কয়েকজন শিশুর খোঁজ-খবর নেন এবং তাদের সঙ্গে সময় কাটান প্রিয়াঙ্কা। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ইউনিসেফের গাড়িতে মেরিন ড্রাইভ হয়ে আবার রয়েল টিউলিপ হোটেলে ফিরে আসেন তিনি।
এ সময় টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া, পুলিশ পরির্দশক রাজু আহমেদ ও ইউসিফের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
টেকনাফ থানা পুলিশের ওসি রনজিত বড়ুয়া বলেন, গতকাল সোমবার বিকেলে বাহারছড়ায় অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান প্রিয়াঙ্কা। সেখানে সবার সঙ্গে খোলামেলাভাবে কথা বলেন তিনি। এ সুযোগে অনেকে সেলফির নামে তার সঙ্গে তামাশা করেছেন। ফলে মঙ্গলবার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দূরে থেকেছেন প্রিয়াঙ্কা। শুধু রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে মিশেছেন তিনি। তার চাওয়া মতো নিরাপত্তা কঠোরভাবে পালন করা হয়েছে। শুধু সাধারণ মানুষ নয় গণমাধ্যমকর্মী এবং স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকেও দূরে থাকার চেষ্টা করেছেন প্রিয়াঙ্কা।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার আফরাজুল হক টুটুল জানান, টেকনাফের সীমান্ত ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ইনানীর হোটেল রয়েল টিউলিপের উদ্দেশে টেকনাফ ত্যাগ করেন প্রিয়াঙ্কা। বুধবার সকালে প্রথমে উখিয়ার জামতলী ও পরে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করার পর কক্সবাজার ত্যাগ করবেন বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ১৯ মে ব্রিটিশ রাজপরিবারের আমন্ত্রণে প্রিন্স হ্যারি আর মেগান মার্কেলের রাজকীয় বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে তিনি দুবাই হয়ে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজে ঢাকায় এসেছেন সোমবার। চারদিন পর ঢাকা ত্যাগ করবেন তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন