ফরিদপুরের ভাঙ্গায় হয়রানিমুক্ত ভূমি সেবা দিতে এসিল্যান্ডের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
ভূমি সংক্রান্ত সকল সেবা হয়রানি মুক্ত করতে ব্যতিক্রমী কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন ভাঙ্গা উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাহামুদুল হাসান।
জানা যায় অতীতের বিভিন্ন সময়ে দালাল চক্রের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা এবং ভূমির নামজারির ক্ষেত্রে ভূয়া দলিল/ কাগজপত্রের কারনে জমির মালিকদের বিভিন্ন হয়রানির কথা বিবেচনা করে ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবার সরকার নির্ধারিত ফি এবং সেবার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের বিবরণের সকল তথ্য জানিয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের দেয়ালে লিখে জনসচেতনতা তৈরী করেছেন।
জনগনের সকল প্রকার অভিযোগ জানতে খুলেছেন একটি অভিযোগ বক্স, জনগনের দেয়া অভিযোগ গুলোতে যেন কেউ হস্তক্ষেপ করতে না পারে সে কারনে বক্সের চাবির দায়িত্বে রয়েছেন এসিল্যান্ড নিজে।
সোস্যাল মিডিয়ায় উপজেলা ভূমি অফিস নামে ফেইসবুক আইডি খুলেছেন সেখানেও নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন অভিযোগ এবং দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন পরামর্শ।
ভূমি সেবা প্রক্রিয়া সহজ করার লক্ষ্যে তৈরী করেছেন সেবাবক্স, সেখানেও দেয়া রয়েছে যাবতীয় আবেদনপত্রের নমুনা ও যথাযথ প্রক্রিয়া। এক কথায় ভূমি সেবা হয়রানি ও দালালমুক্ত করতে সকল পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন এসিল্যান্ড।
এছাড়াও ভূমি অফিসে আসার সেবাগ্রহীতাসহ সর্বসাধারনের বিশ্রামের জন্য ভূমি অফিস চত্বরে ’’তরু ছায়া” নামে উপজেলায় প্রথমবারের মত একটি দৃষ্টিনন্দন গোলঘর তৈরি করছেন যা ইতোমধ্যে সকল স্তরের মানুষের নজর কেড়েছে।
এছাড়াও অফিসের যাবতীয় নথিপত্র নিরাপদভাবে সংরক্ষনের নিমিত্ত অফিসের অভ্যন্তরে রেকর্ড রুম সংস্কার করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়াও ইউনিয়ন ভূমি অফিস গুলোতে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করার লক্ষে ভূমি সংস্কার বোর্ডের অর্থায়নে বিভিন্ন ভূমি অফিসে ল্যাপটপ, স্ক্যানার ও প্রিন্টার প্রদান করেন। ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতে যাবতীয় নথিপত্র সংরক্ষনের জন্য ষ্টীলের আলমারি, তাকসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম প্রদানেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
ভাঙ্গা ভূমি অফিসে উপজেলার রশিবপুরা গ্রামের সরোয়ার হোসেন এসেছেন নামজারি করতে। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি নামজারির আবেদন করতে এসেছি, কোন প্রকার হয়রানি ছাড়া ও দালালমুক্ত ভাবে আমি আমার আবেদন জমা দিয়েছি। বর্তমান এই পরিবেশে আমরা অনেক খুশি।
আলগী ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের হায়দার হোসেনের স্ত্রী কারিমা জানান আমরা বরিশাল থাকি, আমি জমির নাম জারির জন্য গিয়েছিলাম উপজেলা ভূমি অফিসে এবং কোন প্রকার হয়রানি, অতিরিক্ত টাকা ছাড়া আমার জমির নামজারি হয়েছে। আমি এসিল্যান্ডের ব্যবহারে অত্যন্ত খুশি, এমন অফিসার সহসায় হয়না।
এব্যাপারে এসিল্যান্ড মাহামুদুল হাসান বলেন জনসাধারনকে হয়রানিমুক্ত স্মার্ট ভূমিসেবা দেয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমি ও আমার টিম নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আগে যেখানে একটি নামজারি নিষ্পত্তিতে ২/৩মাসও লেগে যেত সেখানে আমরা এখন ১৫দিনে নিষ্পত্তি করছি। মিসকেস ও অন্যান্য সেবার ক্ষেত্রেও যতদূর সম্ভব কম সময়ে নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করছি। আমি দূর দুরান্ত থেকে আসা জনগনের কষ্টের কথা চিন্তা করে বসার জন্য একটা গোলঘর তৈরি করেছি,গোল ঘরের পাশেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছি, পুরো অফিস সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন মোতাবেক অফিস চত্বরের পতিত জমিতে শাক-সবজি রোপন করেছি।আমি যতদিন এই ভূমি অফিসে চাকুরি করব ততদিন জনগনের সেবক হিসেবেই সর্বদা পাশে থাকব।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন