ফাঁস হওয়া সেই অডিও ক্লিপের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন কাটাখালীর মেয়র
গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার রাজনীতির মাঠ তোলপাড় রাজশাহীর কাটাখালী পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্বাস আলীর ফাঁস হওয়া এক অডিও ক্লিপ নিয়ে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপনকে কেন্দ্র করে এই আওয়ামী লীগ নেতা কটূক্তি করেছেন, গত রোববার থেকে ফেসবুকে এমন একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল।
বিষয়টি নিয়ে চলমান তুমুল বিতর্কের মধ্যেই সেই অডিও ক্লিপ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন মেয়র আব্বাস আলী। ১ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের ওই অডিও এডিট করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৯ মের দুটি ভিডিও সংবলিত নিজের পোস্ট শেয়ার করে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল এবং আমার কিছু কথা’ শিরোনামে ব্যাখ্যাটি দেন তিনি।
মেয়র আব্বাস আলী লিখেছেন, ‘গতকাল থেকে কিছু সংবাদমাধ্যম এবং ফেসবুকে আমার কথোপকথনের একটি অডিও ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে। অডিওটি সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনুন, আপনারা বুঝতে পারবেন, অডিওটি এডিট করে তৈরি করা হয়েছে।আমি কখনো কারও সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ গেট নির্মাণ করা হবে না কিংবা কেউ ম্যুরাল নির্মাণ করলে বাধা দেয়া হবে, এ রকম কথা কারও সামনে কখনো বলিনি। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে লালন করি এবং মমতাময়ী জননী বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার দেখানো পথে একজন সাধারণ কর্মী হয়ে পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।’
পোস্টের শুরুতে আব্বাস আলী লিখেছেন, ‘গত ২৯ মে আমার ফেসবুক আইডি থেকে কাটাখালী পৌরসভার প্রবেশদ্বারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ গেট নির্মাণ করা হবে মর্মে (ভিডিও) আপলোড দিয়েছিলাম। গেট নির্মাণের জন্য সকল প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু ঢাকা টু রাজশাহী মহাসড়ক দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলমান থাকায় গেটটি নির্মাণ সাময়িকভাবে বন্ধ আছে। চার লেন রাস্তা নির্মাণের জন্য মহাসড়কের দুই ধারে কতটুকু জায়গা বাড়ছে, সেটা নিশ্চিত হওয়ার পরে আশা করছি আগামী বছরের জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারিতে পুনরায় গেট নির্মাণের প্রস্তুতি শুরু করতে পারব ইনশা আল্লাহ।’
উল্লেখ্য, নৌকা প্রতীক নিয়ে কাটাখালীর পৌরসভা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আব্বাস আলী দুবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যও তিনি।
রোববার রাতে তার সেই ফাঁস হওয়া অডিওতে শোনা যায়- ‘জীবন দিয়ে হলেও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল বসাতে দেওয়া হবে না।’ এ ঘটনায় রাজশাহীজুড়ে আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ও প্রগতিশীল মহলে ক্ষোভ এবং অসন্তোষ বিরাজ করছে।
আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র আব্বাসকে অবিলম্বে বহিষ্কার এবং মেয়র পদ থেকে অপসারণের দাবি উঠেছে। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলেন, পারিবারিকভাবেই আব্বাস বিতর্কিত। এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে তিনি চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় তিনি কুঠারাঘাত করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে কটূক্তি, পৌর মেয়রের অডিও ভাইরাল
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে কটূক্তি করায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে রাজশাহীর কাটাখালি পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি তার দেওয়া বক্তব্যের অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। নৌকা প্রতীক নিয়ে দু’বার মেয়র নির্বাচিত হলেও তার এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ দলের নেতাকর্মীরা।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন মেয়রের পর এবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটুক্তি করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন রাজশাহীর কাটাখালি পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী।
এক ঘণ্টা ৪ মিনিটের একটি অডিও রেকর্ডে মেয়র আব্বাস বলেন, ইসলামের দৃষ্টিতে পাপ তাই সিটি গেটে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন করবেন না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও রেকর্ডটি ভাইরাল হলে ক্ষোভে ফুঁসে উঠে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
অডিওতে আব্বাস আলীকে বলতে শোনা যায়, ‘যে ম্যুরাল দিছে বঙ্গবন্ধুর। এটা ইসলামি শরিয়ত অনুপাতে (অনুসারে) সঠিক নয়। এ জন্য আমি ওটা থুব (রাখব) না।’
এই অডিও রেকর্ডে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ কামারুজ্জামানের সন্তান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে উদ্দেশ্য করে গালমন্দ করেন আব্বাস।
জাতির পিতাকে নিয়ে এমন বেফাঁস মন্তব্য করায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান জেলার শীর্ষ নেতা।
রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেন, বিষয়টি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল। কথাটি বলেছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নিয়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটূক্তি করে কেউ রক্ষা পাননি। এই তথ্য-প্রমাণসহ বিচার-বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও মেয়র আব্বাস ফোন রিসিভ করেননি। পরে কাটাখালি পৌরসভা ও তার বাড়িতে গিয়েও হদিস মিলেনি তার।
জাতীয় পার্টি থেকে ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগে যোগদানের পর ২০১৫ সালে প্রথম ও ২০২০ সালে দ্বিতীয়বারের মতো নৌকা প্রতীক নিয়ে পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন আব্বাস আলী। বর্তমানে তিনি কাটাখালি পৌরসভা আওয়ামী লীগের আহ্বায়কের দ্বায়িত্বে রয়েছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন