ফাঁড়িতে হামলা করে আসামি ছিনতাই, ১২ পুলিশ আহত
নরসিংদী : হত্যা মামলার আসামিদের ছিনিয়ে নিতে রায়পুরার বাঁশগাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক পক্ষের নেতাকর্মীদের হামলায় ১২ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মুমূর্ষু তিন পুলিশ সদস্যকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি বাজারের অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়িতে এ হামলা ঘটে। এ সময় হামলাকারীরা গ্রেপ্তার চার আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুর রহমান ও রায়পুরা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) বেলাল হোসেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের দুই আওয়ামী লীগ নেতার সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ও সংঘর্ষ চলে আসছে। বিভিন্ন সময় দুই পক্ষে বন্দুক ও টেঁটাযুদ্ধে একাধিক ব্যক্তি নিহত হয়। সেসব হত্যা মামলার আসামি রুপ মিয়া, সাব মিয়া, আজিজুল ও হাবিবুরকে শুক্রবার বিকেলে পুলিশ আটক করে বাঁশগাড়ি বাজারের অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।
এর প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান সাহেদ সরকারের সমর্থকরা সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আগ্নেয়াস্ত্র, হাতবোমা, টেঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়। তাদের ছোড়া বোমার আঘাতে পুলিশের নায়েক হানিফের পায়ের তিনটি আঙুল উড়ে যায় ও ব্যাপক স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয় তার শরীরে। কনস্টেবল হেফজুর রহমান টেঁটাবিদ্ধ হন। কনস্টেবল হামিদকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। এ ছাড়া আরও নয় পুলিশ সদস্য ইটপাটকেল ও লাঠির আঘাতে আহত হন। হামলাকারীরা এ সময় ফাঁড়ি থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় আটক আসামিদের।
ঘটনার খবর পেয়ে রায়পুরা সার্কেলের এএসপি বেলাল হোসেনের নেতৃত্বে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম বিপুলসংখ্যক পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে ।
গুরুতর আহত তিন পুলিশ সদস্যকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে এবং অন্য নয় পুলিশ সদস্যকে রায়পুরা উপজেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নরসিংদীর জেলা প্রসাশক ড. সুবাস চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার আমেনা বেগম ও রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন।
পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা এবং পুলিশের সঙ্গে দাঙ্গায় কোনো সাধারণ মানুষ আহত হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করে কেউ জানাতে পারেনি।
বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের দুই আওয়ামী লীগ নেতার কর্মীদের দাঙ্গার কারণে গত ১৯ এপ্রিল থেকে বাঁশগাড়ি এলাকায় উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। ওই ১৪৪ ধারা এখনো বলবৎ রয়েছে। এর মধ্যেই শুক্রবার পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনাটি ঘটল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন