ফাইনালের স্বপ্ন পুরণ হবে তামিম-মুশফিকদের?
কার্ডিফে সাকিব-মাহমুদুল্লাহর রেকর্ড পার্টনাশীপে ভর করে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মত আইসিসি বৈশ্বিক কোন টুর্নামেন্টের সেমি-ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে টাইগাররা। সেমিফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের মুখোমুখি হয়েছে লাল সবুজের বাংলাদেশ। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একদম ভাল হয়নি মাশরাফিদের। দলীয় ৩১ রানেই সাঝঘরে ফিরেছেন ওপেনার সৌম্য আর সাব্বির। মুশফিকের সাথে ১২৩ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ে খেলায় ফেরেন তামিম।
৭০ রান করে কেদার যাদবের বলে আউট হন তামিম। এরপর হুরমুর করে ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। তামিমের পর অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে সাঝঘরে ফেরেন সাকিব এবং মুশফিক। ফলে শঙ্কায় পড়ে লাল সবুজের দলের ফাইনাল খেলার স্বপ্ন। ক্রিজে রয়েছেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ আর তুরুণ মোসাদ্দেক।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বার্মিংহামের এজবাস্টনে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ৩টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে ১০ মিনিট পরে শুরু হয় খেলা। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বড় ধাক্কা খায় টাইগাররা। ভুবনেশ্বর কুমারের করা প্রথম ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়েছেন সৌম্য সরকার। শূণ্য হাতেই ফিরেছেন এই ওপেনার।
সৌম্যর বিদায়ের পর দারুন খেলছিলেন সাব্বির রহমান। তার ব্যাটে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল টাইগার সমর্থকরা। কিন্তু বাজে শট খেলে আউট হয়েছেন তিনিও। ভুবনেশ্বর কুমারের বলে জাদেজার হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেয়ার আগে ২১ বলে ১৯ রান করেন সাব্বির। ৩১ রানে দুই উইকেট হারানো বাংলাদেশের ইনিংস গড়ার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন ওপেনার তামিম ইকবাল আর অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহীম। রবীন্দ্র জাদেজার করা ১৯তম ওভারের শেষ বলে চার মেরে ক্যারিয়ারের ৩৮তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন দেশসেরা ওপেনার তামিম।
মুশফিকুর রহীমের সাথে দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে বাংলাদেশকে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে নেন তামিম। দলীয় ১৪৫ রানে কেদার যাদবের বলে সাঝঘরে ফেরার আগে ৮২ বলে ৭টি চার আর এক ছক্কায় ৭০ রান করেন এই ওপেনার। এরপর দ্রুত বিদায় নেন সাকিব আর মুশফিক।
ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। চার স্পেশালিস্ট পেসার নিয়ে খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। পরিবর্তন আসেনি ভারতের একাদশেও।
ক্রিকেট বিশ্বের শীর্ষ র্যাংকের আটটি দল নিয়ে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কার কাছে পরাজিত হওয়া ভারতীয়রা দুর্দান্ত প্রতাপে শীর্ষ দল দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ চারের টিকিট নিশ্চিত করেছে। পক্ষান্তরে কার্ডিফে সাকিব-মাহমুদুল্লাহর রেকর্ড পার্টনাশীপে ভর করে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মত আইসিসি আয়োজিত কোন টুর্নামেন্টের সেমি-ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। সেমিতে উপমহাদেশের দু’টি দল হওয়ায় এই ম্যাচটি এশিয়ার মধ্যে সর্বাধিক দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এজবাস্টনের এ মাঠেই নিজেদের প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে ১২৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছিল ভারত। এরপর প্রোটিয়াদের বিপক্ষেও বড় জয় পায় কোহলির নেতৃত্বাধীন দলটি। ভারতীয় বোলিংয়ের সামনে মাত্র ১৯১ রানেই গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে কোহলির অপরাজিত ৭৬ রানের সুবাদে ১২ ওভার হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করেছিল টিম ইন্ডিয়া।
এদিকে বাংলাদেশ বোলিংয়ে দারুণ সফলতা প্রদর্শন করেছে। বিশেষ করে কার্ডিফে বোলাররা নিউজিল্যান্ডকে ২৬৫ রানে আটকে রাখার পাশাপাশি আট উইকেট তুলে নিয়ে দারুণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। এরপর মাত্র ৩৩ রানে চার উইকেট হারানোর পরও টাইগাররা দারুন একটি জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। এরপর এজবাস্টনে ইংলিশরা গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দিলে শেষ চারে অংশগ্রহণের নিশ্চিয়তা লাভ করে বাংলাদেশ।
এ পর্যন্ত ৩২টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে ভারত ও বাংলাদেশ। তন্মধ্যে ভারত ২৬টি এবং বাংলাদেশ ৫টিতে জয় পেয়েছে। একটি ম্যাচে কোন ফলাফল আসেনি।
বাংলাদেশ একাদশ: মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন, তাসকিন আহদে, রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান
ভারতীয় একাদশ: বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, যুবরাজ সিং, এমএস ধোনি, কেদার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, ভুবনেশ্বর কুমার, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও জসপ্রিত বুমরাহ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন