ফের প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা আওয়ামী লীগের
রাজনীতির মাঠে প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। প্রথম বারের মতো গত ১৫ অক্টোবর বিকালে ঢাকার সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে শেখ হাসিনার পক্ষে স্লোগান দেন কিছুসংখ্যক আইনজীবী।
গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) মধ্যরাতে চট্টগ্রামে হঠাৎ বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ২০-৩০ জন নেতাকর্মী। এছাড়া শনিবার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আওয়ামী লীগের কয়েক জন সমর্থক মানববন্ধনের চেষ্টা করেন। বিএনপি সমর্থক কয়েক জনের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যান।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দোয়া মাহফিল ও গরিব-দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৬১তম জন্মদিন পালন করেন ছাত্রলীগের সাবেক সাত নেতাকর্মী।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান। এরপর দীর্ঘ আড়াই মাস দলটির নেতাকর্মীদের মাঠে দেখা যায়নি। দলটির কেন্দ্রীয় নেতা ও এমপি-মন্ত্রীদের প্রায় সবাই চলে যান আত্মগোপনে। অনেকে পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে দিন কাটছে অনেক নেতাকর্মীর।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপির ওপর যা যা হয়েছিল, এখন আওয়ামী লীগের ওপর তা-ই ঘটছে।
চট্টগ্রাম মধ্যরাতে হঠাৎ বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগ : শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার জামালখান এলাকায় মধ্যরাতে হঠাৎ বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েক জন নেতাকর্মী। শুক্রবার রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে ২০ থেকে ৩০ জন লোক সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। মিছিলটিতে অংশ নেওয়া বেশির ভাগই ছিলেন তরুণ।
কয়েকটি মোটরসাইকেলযোগে তারা জামালখান মোড় এলাকায় জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু এবং ‘শেখ হাসিনার ভয় নেই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। এদের কারো কারো হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল।
তবে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মিছিলের তিনটি ভিডিও শুক্রবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড পেজ থেকে শেয়ার করে লেখা হয়, ‘চট্টগ্রামে জয় বাংলা স্লোগানে প্রকম্পিত রাজপথ। অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকদের দমিয়ে রাখা যায় না।’
এদিকে হঠাৎ আওয়ামী লীগের মিছিলের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা জানান, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে এ কর্মসূচি পালনের দুঃসাহস দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ। কারণ অস্ত্র হাতে ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন এরকম সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
প্রতিবাদে শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় জামালখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
প্রেস ক্লাবের সামনে আওয়ামী লীগ-সমর্থকদের মারধর : আওয়ামী লীগ-সমর্থিত বেশ কয়েক জন নেতাকর্মীকে মারধর করেছে বিএনপি-সমর্থিত নেতাকর্মীরা।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১২টার দিকে ১০-১৫ জন আওয়ামী লীগ-সমর্থক নেতাকর্মী প্রেস ক্লাবের সামনে এসেছিলেন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে। তা শোনার পরই বিএনপির ৫০-৬০ নেতাকর্মী এসে তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় আওয়ামী লীগের একজন কর্মীকে বিএনপি-সমর্থিত চার-পাঁচ জন বেধড়ক মারধর করে।
এর একটি ভিডিও তাৎক্ষণিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, ‘ঐ ধর ধর, আওয়ামী লীগ ধর, সব কয়টারে ধর- পালাইতেছে।’ বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাওয়া খেয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী বলেন, ‘এই দেশে আওয়ামী লীগের ইতিহাস কেউ কখনো মুছতে পারবে না। আমরা ছিলাম, আছি, থাকব ইনশাআল্লাহ।’
সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে শেখ হাসিনার পক্ষে স্লোগান : গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ফারুক খানকে রিমান্ড শেষে আদালতের হাজতখানায় নেওয়ার সময় সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে স্লোগান দেন কিছুসংখ্যক আইনজীবী। আইনজীবীরা করতালির সঙ্গে সঙ্গে স্লোগানে বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার, বারবার দরকার’, ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘ফারুক ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘শেখ হাসিনা ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ইত্যাদি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন