ফ্রিজ কিনে গাড়ি পেলেন নওগাঁর রানীনগরের খাদিজা
নওগাঁর রাণীনগরে ওয়ালটনের পণ্য কিনে জাপানি ব্র্যান্ডের গাড়ি পেলেন খাদিজা বিবি। দেশব্যাপী চলমান ‘ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-১৮’ এর আওতায় মাত্র সাড়ে ৫ হাজার টাকা কিস্তি জমা দিয়ে তিনি এই গাড়ি জিতে নিয়েছেন। খাদিজা বিবি নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কালিগ্রাম ইউনিয়নের আবাদপুকুর গ্রামের বাসিন্দা।
সোমবার (১২ জুন) বিকেলে আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে তার হাতে জাপানি ব্র্যান্ডের গাড়ির চাবি তুলে দেন ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আমিন খান এবং ওয়ালটনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) মোহাম্মদ রায়হান।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে চিত্র নায়ক মামনুন হাসান ইমন, ওয়ালটনের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) হুমায়‚ন কবির, রেফ্রিজারেটরের চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) তোফায়েল আহমেদ, নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) গাজিউর রহমানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ওয়ালটনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর গ্রামের খাদিজা বিবি স্বামী হারিয়েছেন ২ বছর আগে। ২ ছেলে ও ১ মেয়ে আছে তার। বড় ছেলে আল আমিন বরিশালের একটি পরিবহন কোম্পানিতে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করছেন। ছোট মেয়ে বাড়িতেই থাকেন মায়ের সঙ্গে। ছোট ছেলে সাদ্দাম হোসেন ঢাকার শ্যামলীতে সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। ২ সপ্তাহ আগে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ থেকে ইন্টার্ন শেষ করে ডাক্তার হয়ে বেরিয়েছেন।
বেসরকারি মেডিকেলে ছেলেকে পড়াতে গিয়ে পুরো পরিবার বড় অংকের খরচের সম্মুখীন হোন। নগদ টাকার সংকটে থাকায় ফ্রিজ কিনতেও পারছিলেন না। ওই মুহ‚র্তে জানতে পারেন ওয়ালটনে কিস্তিতে ফ্রিজ পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি জানার পর গত (৬ মে) সকালে বড় ছেলে আলামিনকে সঙ্গে নিয়ে আবাদপুকুর ওয়ালটন প্লাজায় কিস্তিতে ফ্রিজ কিনতে যান। মাত্র সাড়ে ৫ হাজার টাকা পেয়ে যান ৪৮ হাজার ৪৯০ টাকা মুল্যের ফ্রিজ। এরপরই তার নম্বর ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করা হয়। সেখান থেকে ফ্রিজ বাড়িতে আনা মাত্রই ফিরতি মেসেজে গাড়ি ফ্রিজ পাওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন তারা।
সোমবার (১২ জুন) বিকেলে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর মাঠে গাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠান দেখতে ভিড় জমান জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সব বয়সীর মানুষ। সেখানে ম মাতান আমন্ত্রিত অতিথিরা। এরপর সন্ধ্যার আগে খাদিজা বিবির হাতে গাড়ির চাবি তুলে দেওয়া হয়। চাবি হাতে পেয়ে মে ই আবেগ আপ্লুত হয়ে ওঠেন খাদিজা বিবি ও তার বড় ছেলে আল আমিন।
গাড়ি জেতার অনুভ‚তি ব্যক্ত করে তার ছেলে আল আমিন বলেন, কাছে নগদ টাকা খুব বেশি ছিল না। ওয়ালটন কিস্তিতে পণ্য দিচ্ছে জেনে শোরুমের ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাজেটের কথা বলেছিলাম। পরে সাড়ে ৫ হাজার টাকা জমা দিয়েই ৪৮ হাজার ৪৯০ টাকার ফ্রিজ কিনে বাড়িতে নিয়ে যাই। বাড়িতে যাবার পরই এই ক্যাম্পেইনে একটি গাড়ি জেতার মেসেজ পাই।
তিনি বলেন, ওয়ালটের এতো বড় অফার চলছিলো সে বিষয়ে আগে থেকে কোন ধারণা ছিলো না। শোরুমের ম্যানেজার নিজে আমার বাড়িতে গিয়ে গাড়ি জেতার বিষয়টি নিশ্চিত করে এসেছেন। এই গাড়ি আমার পরিবারকে সামনের দিনে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এই গাড়িতে কিছুদিন ঘুরবো। এরপর গাড়িটি কী করা হবে সে বিষয়ে সিন্ধান্ত নেব।
চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমন বলেন, নওগাঁয় প্রথমবারের মতো এসে এ জেলার মানুষের ভালোবাসায় অভিভ‚ত হয়েছি। দেশের সবচেয়ে বড় একটি ব্রান্ডের সঙ্গে গাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে খুবই ভালো লেগেছে। একটা মানুষের স্বপ্ন পুরণের সাথী হতে পেরেছি এটা অনেক বড় পাওয়া। গাড়ির চাবি হস্তান্তরের পর ওই মায়ের মুখের হাসিটা সবচেয়ে সেরা মুহুর্ত ছিল।
ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আমিন খান বলেন, দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই ওয়ালটন বিশ্বমানের পণ্য দিচ্ছে। কিস্তিতে কেউ পণ্য কিনে যদি মারা যান সেক্ষেত্রে তার কিস্তি সম্প‚র্ণ মওকুফ এবং নিহতের পরিবারকে ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুদান দেবে। যা বিশ্বের কোনো কোম্পানি এখনো দিতে পারেনি। এর কারণ এটা দেশের কোম্পানি নয় দেশের মানুষের কোম্পানি। তিনি বলেন, ওয়ালটন জন্ম না নিলে বিদেশি টিভি, ফ্রিজ, এসি ২ লাখ টাকার কমে আমাদের দেশে পাওয়া যেতো না। ওয়ালটনের সঙ্গে তারা ব্যবসা করে টিকে থাকার জন্য বিদেশিরা তাদের পণ্যের দাম কমিয়ে এনেছে। ওয়ালটন বিভিন্ন উৎসবে অনেক বড় বড় উপহার দিয়ে থাকে। বর্তমানে চলমান অফার ঈদের পরেও বলবৎ থাকবে। তাই ওয়ালটনের পণ্য কিনে সবাইকে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশনের পরামর্শ দেন তিনি।
ওয়ালটনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) মোহাম্মদ রায়হান বলেন, দেশের সাড়ে ১৭ কোটি মানুষের প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। এই প্রতিষ্ঠানের উন্নতি মানেই দেশের উন্নতি। এ দেশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে ওয়ালটন বহুমুখী উদ্যোগ নিয়েছে। তারই একটি উদাহরণ কিস্তিতে পণ্য কেনা সদস্যদের একটি কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসায় পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডিসকাউন্ট এবং মৃত্যুর পর সম্প‚র্ণ কিস্তি মৌকুফ ও অনুদান প্রদান। এর মাধ্যমে কিি ত হলেও দেশের মানুষের জন্য সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে পারায় ভালো লাগা কাজ করে।
তিনি বলেন, ওয়ালটন সাড়ে ছয় হাজার পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছে। প্রায় ৩ লাখ মানুষের দেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। এক সময় এর সংখ্যা ৩০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী। ঈদকে সামনে রেখে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে এসব গাড়ি দেওয়া অব্যাহত থাকবে। গাড়ির পাশাপাশি লাখ লাখ টাকার পুরস্কারও দেওয়া হচ্ছে। গাড়ি উপহার দেওয়ার মাধ্যমে আবাদপুকুর গ্রামবাসীকে অগ্রিম ঈদের আনন্দ দিয়ে যেতে পারলাম এটাই অনেক বড় পাওয়া।
ওয়ালটন সুত্রে জানা যায়, অনলাইন অটোমেশিনের মাধ্যমে গ্রাহকদের আরও দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে সারাদেশে চলছে ওয়ালটনের ডিজিটাল ক্যাম্পেইন। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ক্যাম্পেইনের সিজন-১৮’তে ক্রেতাদের জন্য ‘ওয়ালটন পণ্যে সাজবে বাড়ি, ঈদে এবার নিজের গাড়ি’ শীর্ষক বিশেষ সুবিধা রয়েছে। এর আওতায় দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা, পরিবেশক শোরুম ও অনলাইন সেলস প্লাটফর্ম ই-প্লাজা থেকে ফ্রিজ, টিভি, এয়ার কন্ডিশনার বা ওয়াশিং মেশিন কিনে ক্রেতারা পাচ্ছেন গাড়িসহ লাখ লাখ উপহার। ক্রেতারা এসব সুবিধা পাচ্ছেন ১৫ জুলাই তারিখ পর্যন্ত।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন