বগুড়ার শিবগঞ্জের চন্দনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বুক চিরে পাকা রাস্তা ও প্রাচীন নির্মাণ

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের চন্দনপুর ইউনাইটেড দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বুক চিরে নির্মাণ করা হয়েছে চলাচরের জন্য পাকা রাস্তা ও প্রাচীন। বিদ্যালয়টি ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও দেখলে মনে হবে রুগ্ন ও জরাজীর্ণ একটি বিদ্যালয়।

সূত্র বলছে, ৫৯ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি বিদ্যালয়টিতে। বিগত সরকারের সময়ে বিদ্যালয়টির সভাপতি ও এলাকার কিছু প্রভাবশালীরা জোর করে বিদ্যালয়টির মাঝ বরাবর প্রাচীর দিয়ে বিদ্যালয়টিকে শুধু ছোটই করা হয়নি, প্রাচীরের সাথে মাঠের মধ্যদিয়ে চলাচলের জন্য একবছর আগে পাকাও রাস্তা নির্মাণ করেছে। ফলে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের চন্দনপুর ইউনাইটেড দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়। একসময় বেশ সুনাম ছিলো বিদ্যালয়টির। এখন আর আগের সেই সুনাম ও জৌলুস নেই।

এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোস্তফা, রেজভী বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠের মাঝখান দিয়ে নির্মিত হয়েছে পাকা রাস্তা। রাস্তা দিয়ে সারা দিন মোটরসাইকেল, ট্রাক, নসিমন, করিমন, অটো ভ্যানসহ নানান ধরনের পরিবহন চলাচল করে। মাঠের মধ্যে খরের পালা, এলাকার মানুষের ধান শুকানো, গো-চারনসহ নানা কাজে ব্যবহার হয় খোলা মাঠটি।

ফলে অনেক অভিভাবক বিদ্যালয়টির পরিবেশ দেখে সন্তানদের এ বিদ্যালয়ে ভর্তি করেনা। এতে করে আগের তুলনায় অর্ধেকেরো কম শিক্ষার্থী আছে বিদ্যালয়টিতে। তারা আরও বলেন, মেয়েদের জন্য আলাদা ছোট্ট একটা টয়লেট থাকলেও ছাত্র ও শিক্ষকরা মিলে একটা টয়লেট ব্যবহার করেন। নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা। ৫৯ বছর ধরে একটা ভবন নিয়ে খুড়ে খুড়ে চলছে বিদ্যালয়টি।

চন্দনপুর ইউনাইটেড দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে খেলতে আসা আক্কাস ও আবির জানান, বিদ্যালয়ের মধ্যে দিয়ে পাকা রাস্তা হওয়ার ফলে আমাদের সারাক্ষণ সতর্ক হয়ে চলতে হয়। মাঠের মধ্য দিয়ে রাস্তা হওয়ার কারনে আমরা আগের মতো আর খেলা-ধুলা করতে পারিনা।

বিদ্যালয়ের শরিরচর্চা শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টি ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হ্ওয়ার পর থেকে কোন উন্নয়ন হয়নি। আমরা খুব কষ্ট করে পাঠদান চালাচ্ছি। শিক্ষকদের জন্য আলাদা কোন টয়লেট কোন। ছাত্র শিক্ষক একই টয়লেট ব্যবহার করছি।

এলাকাবাসী জানান, বিদ্যলয়ের বাউন্ডারি ও রাস্তা দেওয়া হয়েছে মাঠের মধ্যে নিয়ে। যে কারণে স্কুলের পাশ দিয়ে অনেক জায়গা বেদখল হয়ে যাচ্ছে। স্কুলের মাঝ দিয়ে পাকা রাস্তা থাকায় শিক্ষার্থীদের খেলা-ধুলাসহ অনেক সমস্যা হয়। তারা আরও বলেন, এই স্কুলে আমি নিজেও শিক্ষার্থী ছিলাম। তখন থেকে দেখে এসেছি স্কুলের অনেক সমস্যা। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার মৌখিকভাবে অবগত করা হয়েছে। আশ্বাস পাওয়া যায়, সমাধান হয় না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাহারুল হান্নান বলেন, এলাকার জনগণ ম্যাপের রাস্তা দাবী করে তৎকালীন সভাপতির সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের মাঠের মধ্যদিয়ে পাকা সড়ক নির্মাণ করেছে।

এবিষয়ে বর্তমান অ্যাডহক কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়ে নতুন কমিটি হয়েছে। বিষয়টি পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তাছাড়া বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ও রাস্তা যাতে মাঠের এক পাশদিয়ে যেন হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়াও অন্যান্য যে সমস্যাগুলে আছে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।