বগুড়ার শিবগঞ্জে তিন’শ বছরের প্রাচীন মধুগঞ্জেশ্বরীর কালীপূজা
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার সাদুল্যাপুর গ্রামে প্রতি বছর বাংলা সালের কার্তিক মাসের অমাবস্যায় অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী এই কালীপূজা। সেই মতে, আজ রবিবার উপজেলার সাদুল্লাপুর গ্রামে এই পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকমুখে জানা যায়, প্রায় তিন শত বছরের প্রাচীন এই কালীপূজা। উপজেলার এই পূজা ঐতিহ্যবাহী তথা উত্তর বঙ্গের অন্যতম কালীপ‚জা।
উপজেলার প্রচীনতম এই পূজায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্তবৃন্দ তাদের মানত দান ও পূণ্য লাভের আশায় এই কালীপূজায় সমবেত হয়। শুধু দেশরই নয় প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকেও ভক্তবৃন্দ বা দর্শনার্থীরা পূজা দর্শনের জন্য আসেন এবং মানত হিসাবে পাঠা বলি করেন। এই পুজার বিশেষ একটি নিয়ম বা ঐতিহ্য রয়েছে তা হলো পাঠা লুট- বলিকৃত পাঠা লুটের উদ্দেশ্যে লুটকারীদের মাঝে ছুঁড়ে ফেলা হয়, শক্তি খাটিয়ে নির্দিষ্ট সীমানা অতিক্রম করলেই সেই পাঠা তাঁর। আরেকটি হলো থান লুট- পুজার স্থানে বা প্রতিমার সামনে পুজাকৃত বা উৎসর্গ করা বিভিন্ন ধরনের প্রসাদ সাজানো থাকে যা একটি নির্দিষ্ট সময় পর যার যে প্রসাদ পছন্দ তাই সেটা নিতে পারবে।
সাদুল্যাপুর গ্রামের এক প্রবীণ ব্যক্তি ও মধুগঞ্জেশ্বরী কালী মাতা মন্দিরের বর্তমান ম্যানেজিং সেবাইত নারায়ণ চন্দ্র সরকারের বলেন, আমি বাপ-দাদার আমল থেকে এই পুজা দেখে আসছি এবং জেনেছি আজ থেকে প্রায় তিন শত বছর আগে মধুসুদন ভাদুরী নামে এক ব্যাক্তি এই পুজা স্থাপনা করেন এবং তার নাম অনুসারেই মধুগঞ্জেশ্বরী কালী পুজা নামকরন হয়।
পরবর্তীতে মধুসুদন ভাদুরী তৎকালীন জমিদার রমন বিহারী সরকারকে পুজা-অর্চনা ও পরিচালনার দায়িত্ব অর্পন করেন এবং তাহার মৃত্যু হইলে রমন বিহারী সরকার সেবাইত হিসেবে নিজ তহবিল থেকে পুজা করেন, রমন বিহারী সরকার মারা গেলে পর্যায়ক্রমে তাহার জৈষ্ঠ পুত্র মৃত রমেস চন্দ্র সরকার, মৃত লব চন্দ্র সরকার, মৃত কুশ চন্দ্র সরকার। বর্তমানে মৃত রমন বিহারী সরকারের একমাত্র জৈষ্ঠ্য পৌত্র এই পুজার ম্যানেজিং সেবাইত হিসেবে নারায়ণ চন্দ্র সরকার প্রায় এক যুগ ধরে এই পুজা পরিচালনা করে আসছেন।
পূজার ম্যানেজিং সেবাইত নারায়ণ চন্দ্র সরকার সাথে পুজা ও পুজার আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ আশা করছি আমরা পুজা উৎসব ভালো হবে সম্পুর্ণ করতে পারবো।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক সুবীর দত্ত জানান, আগামী রবিবার ১২ নভেম্বর উপজেলার সাদুল্লাপুরে ঐতিহ্যবাহী মধুগঞ্জেশ্বরী কালী পুজা অনুষ্ঠিত হবে। পুজা সুষ্টভাবে অনুষ্ঠানের জন্য বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ প্রত্যাহার ও রাস্তা সংস্কার করতে হবে। প্রতিবছর ৩০-৪০হাজার ভক্ত ও পূজারীর আগমন হয় এ পূজায়। তিনি উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ এলাকার সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন