বগুড়ার শিবগঞ্জে মানসম্মত দ্বীনি ও আধুনিক শিক্ষায় ভূমিকা রাখছে ইসলাহুল উম্মাহ মাদরাসা
বগুড়ার শিবগঞ্জে হিফজ ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয়ে মুসলিম শিক্ষার্থীদের মধ্যে আদর্শ ইসলামিক শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা রাখেছে ইসলাহুল উম্মাহ মাদরাসা।
ইসলামি জ্ঞান বিতরণের পাশাপাশি ইসলাহুল উম্মাহ মহিলা শাখা ও রাইট স্কুলের মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে এ মাদরাসার অবদান অনস্বীকার্য।
বিগত নয় বছর পূর্বে ১৮জন শিক্ষার্থী নিয়ে শিবগঞ্জের আমতলীতে প্রতিষ্ঠা হওয়া মাদ্রাসাটি কালের বিবর্তনে পত্র-পল্লবে সুশোভিত হয়ে বিরাট মহীরূহে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬১৭জন এবং শিক্ষক রয়েছে ৩৪জন। আবাসিক ও অনাবাসিক দুই ভাবেই পড়া যায় এ প্রতিষ্ঠানে।
সঠিক পরিচালনা, সর্বাধিক ক্লাস, সর্বোচ্চ যত্ন, দক্ষ শিক্ষক মন্ডলী ও মানসম্পন্ন দ্বীনি শিক্ষার জন্য জাতীয় পর্যায়েও সফলতা পেয়েছে এ প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি শিবগঞ্জের মধ্যে এ মাদরাসাটি সর্ব বৃহৎ ইসলামিক ও জেনারেল শিক্ষা সমন্বিত শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত হিফজ প্রতিযোগীতায় এ প্রতিষ্ঠান প্রথম স্থান অর্জন করেছে। জাতীয় পর্যায়ে ডিওডি বিডি ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশনে সমগ্র বাংলাদেশের মধ্যে হয়েছে ২১তম।
গতকাল বুধবার বিকেলে সরেজমিনে মাদরাসাটিতে গেলে দেখা যায়, এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মানসম্মত পাঠদানের জন্য পর্যাপ্ত ক্লাসরুম, আবাসন ব্যবস্থা ও মনোরম পরিবেশ রয়েছে। ছেলে মেয়েদের পড়ালেখার প্রতি মাদরাসার প্রবল আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়েছে। পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতিও আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়েছে।
এছাড়াও দেখা যায়, ২০২৪ সালে সাদিয়া, মারুফা ও নুসরাত জাহান ২০২৩ সালে আতিকা, সুমাইয়া হাফেজা ও মামুনুর রশীদ হাফেজ হয়েছে এ প্রতিষ্ঠান থেকে। ১২৬ দিনে হাফেজা হয়ে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী তাবাসসুম সারা বাংলাদেশের আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। মাদ্রাসার প্রধানের গুরুদায়িত্বের কারণে এ মাদরাসাটি শিবগঞ্জ অঞ্চলে ইসলামি ও আধুনিক শিক্ষালয় হিসেবে প্রায় এক যুগ ধরে জ্বলন্ত আলোকবর্তিতা হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে।
জানতে চাইলে মাদরাসার মেধাবী শিক্ষার্থী মায়মুনা আক্তার লায়লা বলেন, বিশেষজ্ঞ শিক্ষকের তত্বাবধানে পরিচালিত এ মাদরাসায় একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা, ডায়েরী সংরক্ষণ, পুরস্কার প্রদান,ইংলিশ ও আরবি স্পোকেন ক্লাস, সুন্দর হস্তলিপি শিক্ষা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়াসহ খেলাধুলা ও মানসিক বিকাশের প্রতি নজর দেয়া হয়।
মাদ্রাসার অভিভাবক খুশি বেগম বলেন, মাদ্রাসার পরিবেশ ও শিক্ষার গুণগত মান ভাল হওয়ায় আমার দুই সন্তানকে এ দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়েছি। এ প্রতিষ্ঠানের আরবি, ইংলিশ, বাংলা ও উর্দু ভাষা খুব যত্ন সহকারে শিক্ষা দেয়।
মাদ্রাসাটির পরিচালক মুফতি আতিকুর রহমান জানান, এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যেন আালেম হতে পারে, ইমামতি করতে পারে, দোয়া করতে পারে সেজন্য আমরা কুরআন হাদিস, দোয়া দরুদ ও মাসআলা মাসায়েল গুরুত্ব সহকারে শিখিয়ে থাকি।
এ প্রতিষ্ঠানের শুভাকাঙ্ক্ষী চিকিৎসক আব্দুল আলিম, প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ি সুমন শেখ বলেন, সামাজিক অবক্ষয়, নৈতিক অধঃপতন, মাদকের করাল গ্রাস, অপসংস্কৃতির কালো থাবা ও মোবাইল আসক্তি থেকে শিক্ষার্থী ও যুবসমাজকে মুক্ত রাখতে ইসলাহুল উম্মাহ মাদরাসাটি এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুফতি মোহাম্মাদ উমর ফারুক বলেন, শুধু শিক্ষায় নয়, তার চেয়ে ভালো কিছু করার জন্য এ মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আন্তরিকতা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতায় আমরা এগিয়ে। সন্তানদের সঠিক ভবিষ্যত গড়ার জন্য ও যুব সমাজের অবক্ষয় রোধে আমরা বহুমুখী শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা অর্জনের জন্য আমরা শতভাগ চেষ্টা করি। এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অভিজ্ঞ ও আন্তরিকতা সম্পম্ন হওয়ার কারণে আমরা সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা জাতীয়ভাবে দেশের জন্য অবদান রাখতে চাই ইনশাআল্লাহ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন