বগুড়ার সেই নির্যাতিতা মা-মেয়ে অভিভাবকের জিম্মায়
বগুড়ায় তুফান বাহিনীর বর্বর নির্যাতনের শিকার এক ছাত্রী ও তার মাকে আদালতের নির্দেশে অবশেষে তাদের অভিভাবকের জিম্মায় দেয়া হয়েছে।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিকালে বগুড়ার শিশু আদালতের বিচারক মোহা. ইমদাদুল হক এ আদেশ দেন।
বগুড়ার শাজাহানপুরের ইয়াকুব আলী সোহাগ তার মেয়ে ও স্ত্রীকে বুঝে নেন।
এদিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা গত ১০ অক্টোবর আদালতে ধর্ষণ ও নির্যাতনের পৃথক মামলায় তুফান বাহিনীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করলেও- তা এখনও গৃহীত হয়নি।
শিশু আদালতের বিশেষ কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আমান উল্লাহ জানান, ইয়াকুব আলী সোহাগ নির্যাতিত স্ত্রী ও মামলার বাদী মেয়েকে নিজ জিম্মায় নিতে গত ৩০ অক্টোবর আদালতে আবেদন করেন। আদালত এ ব্যাপারে শুনানির জন্য ৮ নভেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন।
এছাড়া ইয়াকুব আলী তার নির্যাতিতা মেয়েকে নিজ জিম্মায় নিতে বুধবার আদালতে আবেদন করেন।
আদালত শুনানি শেষে মা ও মেয়েকে তার (ইয়াকুব আলী) জিম্মায় দেয়ার আদেশ দেন।
বুধবার বিকাল ৪টার দিকে আদালত থেকে নিজ জিম্মায় নেন। তারা কোথায় থাকবেন, সে ব্যাপারে ইয়াকুব আলী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আগামী ২৩ নভেম্বর ধর্ষণ মামলার চার্জশিট গ্রহণের ব্যাপারে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান অ্যাডভোকেট আমান উল্লাহ।
এদিকে চার্জশিট গৃহীত না হওয়ায় মামলার অন্যতম আসামি পৌর কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকিকে স্থানীয় সরকার বিভাগ বরখাস্ত করতে পারছে না।
বগুড়ার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক সুফিয়া নাজিম জানান, মন্ত্রণালয় থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কাউন্সিলর রুমকির বিরুদ্ধে দেয়া চার্জশিট আদালতে গৃহীত হয়েছে কিনা। চার্জশিট গৃহীত না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
উল্লেখ্য, বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে ভর্তির নামে তুফান সরকার তার বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে গত ১৭ জুলাই দুপুরে ছাত্রীকে তার বাড়িতে ধরে এনে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর রক্তক্ষরণ বন্ধে ও জন্মনিয়ন্ত্রণে ওষুধ খাওয়ানো হয়। ঘটনাটি প্রকাশ করলে বাড়িতে বোমা মারার হুমকিও দেয়া হয়েছিল।
এদিকে তুফানের স্ত্রী আশা ঘটনাটি জানলে তিনি ওই ছাত্রী ও তার মাকে উল্টো শায়েস্তা করার সিদ্ধান্ত নেন। পরে বিচারের নামে ওই ছাত্রী ও তার মাকে ডেকে এনে নির্যাতনের পর তাদের মাথা ন্যাড়া করে দেন তুফানের স্ত্রী আশা, আশার বোন কাউন্সিলর রুমকি ও তার মা রুমি।
তুফান বাহিনীর হুমকি সত্ত্বেও এক প্রতিবেশী মা ও মেয়েকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরদিন ছাত্রীর মা তুফানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় ধর্ষণ ও নির্যাতন মামলা করেন।
এ নিয়ে পত্রিকায় রিপোর্ট হলে সারা দেশে তোলপাড় শুরু হয়। পরে পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করে।
নিরাপত্তার স্বার্থে শিশু আদালত গত ৭ আগস্ট নির্যাতিতা ছাত্রীকে রাজশাহীর বায়রা এলাকায় সেফহোমে এবং মাকে শাহমকদুম এলাকায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পরদিন সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসলাম আলী তাদের সেখানে পৌঁছে দেন।
সর্বশেষ ৯৩ দিনের মাথায় আদালত তাদের স্বজনের জিম্মায় দিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন