আদালতে জবানবন্দি
বগুড়ায় স্বাধীন হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার ৩ কিশোরের
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় বেলতলী হাফেজি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী স্বাধীন শেখ (৭) হত্যা মামলায় স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তিন কিশোর। এই কিশোর ঐ মাদরাসার শিক্ষার্থী। তবে এই জবানবন্দিকে অবিশ্বাসযোগ্য বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী নিহত স্বাধীনের বাবা শাহ আলম।
মঙ্গলবার দুপুরে শিবগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় ওই তিন কিশোর। এ সময় সেখানে বগুড়া সদর উপজেলার প্রবেশন অফিসার আবু সালেহ মোহাম্মদ নূহ উপস্থিত ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের শিকার স্বাধীন উপজেলার সদর ইউনিয়নের আমতলী মাঝপাড়া গ্রামের শাহ আলম শেখের ছেলে।
সিআইডি পুলিশের বরাত দিয়ে জানা যায়, ৫জুলাই সোমবার সন্ধ্যার পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা সিআইডির পরিদর্শক খন্দকার ফুয়াদ রুহানির নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম ওই কিশোরদের নিজ বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে আসেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের বিষয় স্বীকার করলে পুলিশ তাদেরকে হেফাজতে নেয়।
কিশোরদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) মুখপাত্র সহকারী পুলিশ সুপার হাসান শামিম ইকবাল। তিনি বলেন, গ্রেফতার তিন কিশোর স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছে, তাদের মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতে একেবারেই ইচ্ছে হয় না। তারা একসাথে পরিকল্পনা করে এমন একটি কাজ করতে হবে যেন মাদরাসাটি বন্ধ হয়ে যায়। তারা সিদ্ধান্ত নেয় স্বাধীনকে তারা হত্যা করবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা স্বাধীনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মাদরাসার পাশের গাংনই নদীর পাড়ে ফেলে রাখে।
৬জুলাই মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর তিন কিশোরকে যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান সহকারী পুলিশ সুপার হাসান শামীম ইকবাল।
তবে আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকারের বিষয় স্বাধীনের বাবার কাছে অবিশ্বাস্য ব্যাপার মনে হয়েছে। জানতে চাইলে শাহ আলম বলেন, শুধু মাদরাসা বন্ধ করতে ওই তিন কিশোর আমার ছেলেকে হত্যা করেছে, এটা আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। এ হত্যাকান্ডের পিছনে অন্য কেউ জড়িত আছেন। যিনি আড়ালে থেকে ষড়যন্ত্র করছেন।
উল্লেখ্য চলতি বছরের গত ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় স্বাধীনকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরদিন ১৭ জানুয়ারি সকালে মাদরাসা সংলগ্ন গাংনই নদীর ধার থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় স্বাধীনের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে হত্যা মামলা করেন। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও থানা পুলিশ এ মামলার কোনো তথ্য উদঘাটন করতে পারছিল না। পরে বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের আদেশে মামলার তদন্তভার পায় সিআইডি। গত ১৩ মার্চ এ মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেন বগুড়া সিআইডির ইন্সপেক্টর খন্দকার ফুয়াদ রুহানি। তদন্তের এক পর্যায়ে গত মাসের ২৮ জুন বেলতলী হাফেজিয়া মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ (মুহতামিম) শহিদুল ইসলামকে (২৭) সন্দেহজনক আসামি হিসেবে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে গ্রেফতারের সপ্তাহখানেক পরেই তিন কিশোর জবানবন্দি দেয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন