বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস পালিত
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2023/08/IMG_0208-900x450.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
আজ (১৪ আগষ্ট) বিকেলে রাজধানীর গ্রীনরোড-পান্থপথ সংলগ্ন পানি ভবন মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে “বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার আন্তর্জাতিক তদন্ত চাই” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক এর সঞ্চালনায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. মো: আবদুর রাজ্জাক এমপি, মাননীয় কৃষি মন্ত্রী, এম এ মান্নান এমপি, মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী, শফিকুর রহমান এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.), প্রখ্যাত নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও কলামিস্ট, অধ্যাপক নিসার হোসেন, ডিন, চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডিয়াম সদস্য, বঙ্গবন্ধু পরিষদ প্রমুখ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক নেসার হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন। তিনি সব সময় শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত, নির্যাতিত মানুষের পক্ষে কাজ করেছেন। তিনি বাকশাল গঠন করে বাংলার মানুষের চিরতরে দুঃখ, বঞ্চনা, শোষন, নির্যাতনের চিরঅবসান চেয়েছিলেন। আজ বাকশাল সম্পর্কে যে সমালোচনা করা হয় তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
বঙ্গবন্ধুর এই মতবাদ ও দর্শন সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করলে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাশীল ও উন্নত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতো। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে ইন্ধন যুগিয়েছে ও ষড়যন্ত্র করেছেন। আজ বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে যারা সরাসরি পরিকল্পনায় অংশ নিয়েছিলেন তাদের মুখোশ উন্মোচন করার জন্য একটি নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠন করা দরকার।
শফিকুর রহমান এমপি বলেন, ড. ইউনুস ও পিটার হাটস আজও বাংলাদেশ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আর বিএনপি ও জামাত শিবির আরো বেশি হিংস্র ও বর্বরতায় লিপ্ত রয়েছে। বিএনপি দেশকে পিছিয়ে নিতে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন নতুন প্রজন্ম এবং বিশ্ববাসীকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড এবং এর পিছনে ইন্ধনদাতাদের শনাক্ত করতে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা দরকার। এই কমিশন অত্যন্ত দক্ষ ও সুচারুরূপে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সকল তথ্য উপাত্য দেশ ও জাতিকে এবং বিশ্ববাসীকে জানাতে পারবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার কার্য সম্পাদন করে দেশ ও জাতিকে পাপমুক্ত করেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.), প্রখ্যাত নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও কলামিস্ট বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডেই শুধু বাংলাদেশই ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি, দক্ষিণ এশিয়ার উন্নতি, সমৃদ্ধি, শান্তি তথা বিশ্ব শান্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আজকে এই উপমহাদেশে যেই সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ, রাজনৈতিক হত্যাকান্ড মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, বঙ্গবন্ধু নিহত না হলে এই সমস্ত অপশক্তি কোনদিন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারতো না। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা ক্ষেত্রপ্রস্তুত ও প্রেক্ষাপট তৈরীতে এবং বাংলাদেশের তৎকালীন সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসন অনেকাংশে দায়ী ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। তিনি নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে অনুসরণ করার আহ্বান জানান।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড ছিল বিশ্বের অন্যতম নিষ্ঠুর ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। এর পিছনে দেশী-বিদেশী যে আন্তর্জাতিক চক্র কাজ করেছে, দেশ ও জাতির স্বার্থে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠন করা সময়ের দাবি।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, আমাদের ব্যর্থতা আমরা বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে পারিনি।
এটা আমাদের লজ্জা ও ব্যর্থতা। বঙ্গবন্ধু পরিষদ বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে রাজপথে সোচ্চার ছিলেন এবং দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের সমন্বয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ সেই সময়ে কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড যারা ঘটিয়েছে, তারা এদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে মেনে নিতে পারেনি। তারা ধর্মের ভিত্তিতে বাঙালি জাতিকে বিভাজন সৃষ্টি করে ধর্মের দোহায় দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অন্যতম আত্মমর্যাদাশীল ও সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পুরণ হবে। আমরা ইতোমধ্যেই মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি এবং অর্থনৈতিক সূচকে সকল ক্ষেত্রে পাকিস্তান থেকে অনেকগুণ এগিয়ে আছি। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের কুশীলবদের চিহ্নিতকরণ ও আইনের ভিত্তিতে রূপ দিতে বাংলাদেশের প্রখ্যাত আইনজীবীদের নিয়ে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করা দরকার।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধু শান্তির দূত ছিলেন। তিনি শান্তি স্থাপনের জন্য আজীবন কাজ করেছেন। মানবতার মুক্তির কথা তিনি সব সময় বলেছেন। তিনি দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো এবং সকল প্রকার শোষণ বঞ্চনার হাত থেকে বাঙালি জাতিকে রক্ষার জন্য এবং অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সারাজীবন কাজ করেছেন। আজ বঙ্গবন্ধু বেচে থাকলে বিশ্ব শান্তি ও মানবতার জয় চিরধার্য ছিল।
বঙ্গবন্ধু মৃত্যুঞ্জয়ী পুরুষ। তাঁর মৃত্যু নেই, অমর। তিনি আমাদের মাঝে থাকবেন। বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ কোনদিনই শোধ হবে না। কিন্তু আমরা যদি তার আদর্শ ও জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁর মতবাদ ও দর্শনকে সমাজ-জীবনে প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তবেই তাঁর প্রতি আমাদের যথার্থ সম্মান প্রদর্শন সম্ভব।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন, ড. ফিরোজ আহমেদ, রেহান সোবহান, সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম পিপি, ড. লিয়াকত হোসেন মোড়ল, এস এম লুৎফর রহমান, প্রকৌশলী মাইনুর রহমান, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক জালাল উদ্দিন তুহিন, দুর্যোগ ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক শাখাওয়াত ইসলাম খোকন, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক কাজল দত্ত, সহ-প্রচার সম্পাদক এইচ এম মেহেদী হাসান, সহ-অর্থ সম্পাদক মোঃ নুরুদ্দিন চৌধুরী, সহ-দপ্তর সম্পাদক শংকর তালুকদার, কার্য নির্বাহী সদস্য সুজাত আলী জাকারিয়া, তারেক ইমতিয়াজ খান, নাহিদ নূর আলো, মিজান ইবনে হোসেন, মোঃ আলাউদ্দিন, আনন্দ কুমার সেন প্রমুখ। সভা শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ ১৫ আগস্টে শহিদের আত্মা শান্তি ও মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের পরিবেশ ও বন বিষয়ক সম্পাদক মোঃ নেছার আহাম্মদ মিঞা।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন