বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ৯ জেব্রার মৃত্যু

নতুন বছরের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে নয়টি জেব্রার মৃত্যু হয়েছে। পার্কের হিসেব অনুযায়ী, খুব অল্প সময়েই প্রায় এক তৃতীয়াংশ জেব্রার মৃত্যু হয়েছে।

হঠাৎ করে গায়ের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়ার ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে জেব্রাগুলো মারা গেছে। এ মুহূর্তে আটটি প্রেগন্যান্ট জেব্রা নিয়ে গভীর শঙ্কা প্রকাশ করেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ।

ইতোমধ্যে মারা যাওয়া জেব্রাগুলোর দেহ থেকে নানা উপকরণ এবং তাদের ব্যবহৃত ও খাদ্যোপাদানসমূহ সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে ল্যাব প্রতিবেদন সংগ্রহ করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি পরীক্ষাগারের প্রতিবেদন ইতোমধ্যে পার্ক কর্তৃপক্ষ হাতে পেয়েছে। সেসব প্রতিবেদন এবং পারিপার্শ্বিক বিষয় উপস্থাপন করে ওই বৈঠকে জেব্রা মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান জানান, মৃত্যুর কারণ হিসেবে ব্যাকটেরিয়া, করোনা বা খাদ্যে কীটনাশকের উপস্থিতিসহ নানা বিষয় পরীক্ষাগারে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে আইসিডিডিআরবি ল্যাব থেকে করোনা নেগেটিভ এসেছে।

তিনি বলেন, সাফারি পার্কে আগে জেব্রার স্বাভাবিক মৃত্যু দেখা গেছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে জেব্রার গায়ের তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে, শাসকষ্ট হচ্ছে। এসব উপসর্গ দেখা যাওয়ার ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে জেব্রা মারা যাচ্ছে। এটি একটি অজ্ঞাত কারণ। ২ জানুয়ারী থেকে জেব্রাগুলো মারা যায়। কয়েকটি অসুস্থ জেব্রা চিকিৎসা দেয়ার পর সুস্থও হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘প্রাণীর জন্য ময়মনসিংহ এলাকা থেকে ঘাস আনা হয়। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ঘাস ধুয়ে বাকি জেব্রাগুলোকে খাওয়ানো হচ্ছে। তারপরও কয়েকটি জেব্রা মারা গেছে। আটটি জেব্রা প্র্যাগনেন্ট রয়েছে। এগুলোর মধ্যে কোনো ধরণের সংক্রমণ হয় কি না তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত।’

পার্ক সুত্রে জানা যায়, পার্কের যাত্রা শুরুর প্রথম থেকেই জেব্রা পালে নতুন অতিথির সংখ্যা যুক্ত হচ্ছিল। গত কয়েক বছর যাবত বিশেষ করে করোনা সময়ে জেব্রার অধিকতর প্রজনন ঘটে। যেভাবে জেব্রার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিল তাতে কর্তৃপক্ষ অনেক আশাবাদী ছিলেন। দেশের চাহিদা মিটিয়ে জেব্রা বিদেশেও রপ্তানীর একটা সম্ভাবনা ছিল। পার্কের অন্যসব প্রাণীর মধ্যে জেব্রার প্রজনন ছিল আশাব্যঞ্জক। বিভিন্ন সময় জেব্রার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে এবং অল্প সময়ের ব্যবধানে মৃত্যুর কারণগুলো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পার্কে সবশেষ ৩১টি বেশি জেব্রা ছিল।

মঙ্গলবারের (২৫ জানুয়ারী) বৈঠকের পর পরীক্ষাগারের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সতর্কতামূলক বাড়তি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাফারি পার্কের চিকিৎসক ডা. জুলকার নাইন বলেন, প্রাথমিকভাবে যে ডায়াগনোসিস করা হয়েছে সেগুলোতে বড় ধরণের কোনো কিছু চিহ্নিত করা যায়নি। গভীরতর কিছু পাওয়ার জন্য ল্যাব ডায়াগনোসিসের প্রয়োজন পড়ে। নানা উপাদান সংগ্র করে একাধিক ল্যাব ডায়াগনোসিস সম্পন্ন হয়েছে। বোর্ড সভায় সেগুলো উপস্থাপিত হবে। সেখানে বিশেষজ্ঞগণ থাকবেন তারা যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবেন সে অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট দেয়া হবে।