বন্যার্তদের জন্য পাগলা মসজিদের টাকা দেওয়ার খবরটি গুজব

সম্প্রতি কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া টাকা বর্তমান বন্যা পরিস্থিতিতে অনুদান হিসেবে দিয়ে দেয়ার তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বিষয়টি নিতান্তই গুজব বলে জানিয়েছেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক।

উজানের ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও অতিবৃষ্টিতে বর্তমানে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ দেশের অন্তত ১২ জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় গত দুদিন ধরে ফেসবুকের শত শত পোস্টে অনেকে ‘পাগলা মসজিদের দানবাক্সে সবশেষ পাওয়া টাকা বন্যার্তদের দান করার জন্য’ লিখছেন।

এরই মধ্যে আবার ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্টে লিখতে শুরু হয়, মসজিদের দান বাক্সের অর্থ বন্যার্তদের মধ্যে অনুদান হিসেবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, পাগলা মসজিদের ফান্ড থেকে বন্যা কবলিতদের মধ্যে অনুদান দেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা ছড়িয়েছে, সেটি গুজব।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল কালাম আজাদ বলেন, পাগলা মসজিদ পরিচালনার জন্য ৩০ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি রয়েছে। সব শেষ মসজিদের দানবাক্স থেকে টাকা পাওয়ার পর কমিটির কোনো সভা হয়নি। আর দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সভার কোনো সুযোগ নেই। কাজেই কমিটির সভায় বন্যার্তদের জন্য মসজিদের টাকা অনুদান দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, মসজিদটির জায়গায় পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স নামে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ৯টি দান সিন্দুকে কোটি কোটি টাকা দান করেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন। প্রতি তিন মাস পর পর দানবাক্সগুলো খুলে এ থেকে পাওয়া যায় কোটি কোটি টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ বিদেশি মুদ্রা। সবশেষ গত ১৭ আগস্ট ৩ মাস ২৬ দিন পর পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খুলে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। দিনভর গণনা শেষে তার পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা। এর আগে গত ২০ এপ্রিল পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে পাওয়া যায় রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা।