বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫ লাখ ৮৬ হাজার মানুষ
এবারের বন্যায় ২০ জেলার ৩৫৬টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, এতে ৫ লাখ ৮৬ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
এখন পর্যন্ত ৯০টি পয়েন্টের মধ্যে ২৭টি পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, চলতি বন্যায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, নেত্রকোনা, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিসহ ২০ জেলার ৩৫৬টি উপজেলায় ৩৫৮টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এসব উপজেলায় ইতোমধ্যে ৯৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৫৮৬ জন আশ্রয় নিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫ লাখ ৮৬ হাজার। এ সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস-বৃদ্ধি হতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে পরিস্থিতি মোকাবেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) এবং মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চলতি অর্থবছরের ১৪ আগস্ট পর্যন্ত বন্যাদুর্গত এবং বন্যা হতে পারে এমন ৩৩ জেলায় ১০ হাজার ৬৩০ মেট্রিক টন চাল ও ২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় আমরা ঘরে বসে নেই। জেলা প্রশাসকদের বলেছি একটি লোকও যাতে খাবারের কারণে কষ্ট না পায় সেজন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে; তাদের চাহিদামত প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য ও আর্থিক বরাদ্দ দেয়া হবে।
বিভিন্ন স্থানে পানিতে ডুবে এবং সাপের কামড়সহ নানা কারণে এ পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পানি আসা কেবল শুরু হয়েছে। নেমে যেতে এক মাসও লাগতে পারে। পানি চলে না যাওয়া পর্যন্ত আমরা সহায়তা দেব। আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ আছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেক জেলার বন্যা পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত বন্যা ও ত্রাণ কার্যক্রমের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এবং আমাদের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন।
উজানের দেশ চীন, ভারত, নেপাল ও ভুটানে এ বছর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, উজানে বন্যা হলে ভাটির দেশ হিসেবে তার প্রভাব আমাদের উপরও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। এর আলোকে আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করছি এবং মানুষের জন্য সহনশীল রাখতে সক্ষম হয়েছি।
ত্রাণমন্ত্রী বলেন, বিগত বন্যা মোকাবেলায় মাঠ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তার মধ্যে আন্তরিকতার অভাব লক্ষ্য করা গেছে। এ ধরনের মানসিকতা পরিহারের জন্য তাদের অনুরোধ করেছি। সহসাই আমি ও মন্ত্রণালয়ের সচিব বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যাব।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন আমাদের ত্রাণসামগ্রীর অভাব নেই। বন্যা প্রলম্বিত হলেও ত্রাণের অভাব হবে না ইনশাআল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন