বর্ষা মৌসুমে রোহিঙ্গাদের বাঁচাতে ভারতের সহায়তা কামনা

আগামী বর্ষা মৌসুমে যে কোনো দুর্যোগময় পরিস্থিতি থেকে রোহিঙ্গাদের বাঁচাতে ভারতের সহায়তা চেয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

রোববার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠকের সময় মন্ত্রী এ সহায়তা চান।

বৈঠক শেষে ত্রাণমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘কক্সবাজারের উখিয়ায় মিয়ানমারের নাগরিকরা রয়েছেন। বর্ষা মৌসুমে সেখানে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এটা ইতোমধ্যে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় আপনারা দেখেছেন। সেই আলোকে আমরা যে কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারি- সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

‘বন্যা, বর্ষা, ঘূর্ণিঝড় থেকে লোকগুলোকে (রোহিঙ্গা) কীভাবে বাঁচানো যায়, তারা যাতে কষ্ট না পায়, আরামে থাকতে পারে- সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’

বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১২ লাখের মতো জানিয়ে মায়া বলেন, ‘এর মধ্যে ৩০ হাজার গর্ভবতী মহিলা রয়েছেন। বাচ্চা হাওয়া পর্যন্ত তারা (ভারত) কী ধরনের সাহায্য করতে পারেন, ১০ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে ৬০ থেকে ৬৫ ভাগই মহিলা; যদি অতিবৃষ্টি বা ঘূর্ণিঝড় হয় তবে তারা কোন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে এবং সেই ক্ষতিগুলো চিহ্নিত করে কী কী করা যায়, কী ধরনের সহযোগিতা তারা (ভারত) করতে পারেন- সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চিহ্নিত করেছি যদি অতি বৃষ্টি হয় সেখানে লাকড়ির অভাব হবে, তখন হয়তো তারা রান্না-বান্নাই করতে পারবেন না; সেজন্য শুকনো খাবারের জন্য আমরা তাদের বলেছি। শুকনো খাবার হলে অন্তত বর্ষা মৌসুমে বাচ্চা ও মহিলাদের কষ্ট লাঘব হবে। সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’

‘জ্বালানি সরবরাহের বিষয়ে ভারতের সহযোগিতার অনুরোধ জানানো হয়েছে’ উল্লেখ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী বলেন, ‘বাচ্চাদের জন্য বেবি ফুড, দুধ- এগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। তারা বলেছেন, বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে তারা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। সেখানে রাস্তাঘাট অত্যন্ত এলোমেলো অবস্থায় আছে, আমরা বলেছি সেখানে গামবুট ও রেইনকোট দেয়ার জন্য।’

‘বর্ষা ও ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুমে যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হতে পারি সেগুলো চিহ্নিত করে আলোচনা হয়েছে। উনি (রাষ্ট্রদূত) দিল্লী যাবেন, তার সরকারের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। উনি বলেছেন, যতটা সম্ভব আমাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়াবেন।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে তাদের (ভারতের) আরও জোরালো ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ করেছি। তারা বলেছেন, বিশ্ববাসীর সঙ্গে একমত হয়ে তারাও আমাদের সহযোগিতা করবেন।’

হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘আলোচনায় মন্ত্রী জানিয়েছেন, কক্সবাজার এলাকায় সাধারণত অতিবৃষ্টি হয়। যেটা শরণার্থী ক্যাম্পের সমস্যাকে আরও গভীর করে তুলবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কীভাবে এ সমস্যাগুলো নিরসনে কাজ করতে পারে- সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘মানবিক এ সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারকে আমরা সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছি।’