বশেমুরবিপ্রবির ইন্টার্নশিপ ভাতা প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীরা

ইন্টার্নশিপ ভাতা প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার দিন কাটাচ্ছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের প্রথম ব্যাচের একঝাঁক তরুণ শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, আগামী বছরের জুন-জুলাই এর দিকে ইন্টার্নশিপে যাবেন বিভাগের ৬৫ জন শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এর নীতিমালা অনুযায়ী ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ ভাতা প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা। এর সাথে টিএ (ট্রান্সপোর্ট এলোয়েন্স) বাবদ শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন পান ৭৫ টাকা। সে হিসেবে ইন্টার্নশিপের ৬ মাস সময়ে ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীরা প্রতিমাসে ১৭২৫০ টাকা(৩০ দিনে মাস) থেকে ১৭৩২৫(৩১দিনে মাস) টাকা পেয়ে থাকেন।

ইন্টার্নশিপের ভাতা প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা নিয়ে এনিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের প্রথম ব্যাচের(২০১৭-১৮ বর্ষ) শিক্ষার্থী মহসিন হুসাইন বলেন, “ইন্টার্ন শিপ আমাদের মৌলিক ও অত্যাবশ্যকীয় অধিকার, সেখানে এটাকে দাবি হিসাবে উত্থাপন করা হয়েছে এবং সুরাহার জন্য আমাদের এখানে সেখানে দৌড়াদৌড়ি করা লাগছে অথচ আমাদের ক্লাসরুমে বসে টিচারের লেকচারের মধ্যে নিমগ্ন হওয়ার কথা! আমরা ইতিমধ্যে রেজিস্ট্রারকে মাধ্যম করে উপাচার্য বরাবর ইন্টার্নশিপ ভাতা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ সহ ৫ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, বিভাগে ৪টি ব্যাচ মিলে ২৩৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত, খুব শীঘ্রই ৫ম ব্যাচ ভর্তি হবে কিন্তু আমরা এখনো আমাদের ভেটেরিনারি সায়েন্স শিক্ষার মৌলিক প্রয়োজনীয়তা যেমন- সার্জিক্যাল টুল বক্স, ভেটেরিনারি টিচিং হসপিটাল, বিষয়ভিত্তিক পর্যাপ্ত শিক্ষক, স্টাইপেন্ড ভাতা, পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা ও কোর্স রিলেটেড ট্যুর থেকে বঞ্চিত। আমরা প্রশাসন কে ৩ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছি, এর ভিতরে বিদ্যমান সমস্যা সমূহের সমাধানের নিশ্চয়তা না পেলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো”।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, “এনিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের স্মারকলিপিটি পেয়েছি। আল্টিমেটাম দিলেই তো আর সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যায় না। আমরা এটা একাউন্টস শাখাকে ইনফর্ম করেছি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। বাজেট সংক্রান্ত বিষয়ে তারা নেক্সট যখন মিটিং করবে তখন ইউজিসিকে বিষয়টি জানিয়ে নেক্সট বাজেটে ইন্টার্ন ভাতা অন্তর্ভুক্ত করে দিবে”।

বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. গোলাম শাহি আলম ভাতা প্রাপ্তির বিষয়ে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টার্ন স্টুডেন্টদের বাজেট দেয়। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টার্নশিপ বাজেট এসেছে কি ফাইন্যান্স এ খোঁজ নিতে হবে। যদি বাজেট না আসে ইউজিসি থেকে বাজেট আনতে হবে। বিভাগের চেয়ারম্যান এ বিষয়ে ডিনের সাথে যোগাযোগ করবে। ডিন ইউজিসিকে চিঠি দিবে যে আমাদের এতজন ছাত্র এবার ফাইনাল ইয়ারে উঠছে তাদের ইন্টার্ন ভাতা দিতে হবে এবং ভাতা না আসা পর্যন্ত ইউজিসির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে”।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তর শাখার উপ-পরিচালক শেখ মশিকুর রহমান বলেন, “আমরা এটা নিয়ে আগামী রবিবার বসবো। আমাদের অর্থ ও হিসাব দপ্তর শাখার সিনিয়র স্যারদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে রবিবার দ্রুত সময়ের ভিতরে ফাইনাল সিদ্ধান্ত জানানো হবে”।

কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ মোজাহার আলী ইন্টার্ন ভাতার বিষয়ে বলেন, “ভাতার বিষয়টি শিক্ষার্থীরা পজিটিভলি নিতে পারে, আমি উক্ত বিভগের চেয়ারম্যানকে বলেছি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ভেটেরিনারি পড়ানো হয় সেখান থেকে ইন্টার্ন বিষয়ে ইউজিসির ডকুমেন্ট আনতে, আশা করা যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটা গ্রহণ করবে। কারণ ইউজিসি টাকা দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তো আপত্তি থাকার কথা না। এখন ইউজিসির কাছে টাইমলি ভাতার অর্থ চাইতে হবে, যেহেতু এ বিষয়ে ইউজিসির নির্দিষ্ট নীতিমালা আছে, ইউজিসি বাজেট দিবে। যেসব খাত গুলা আগে থেকে ইউজিসির জন্য ওপেন আছে ফাইন্যান্স ডিডি ওইসব খাত অনুযায়ী চাইলে ইউজিসি পজিটিভলি রেসপন্স করবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম এবারই প্রথম, শিক্ষার্থীরা এখন চতুর্থ বর্ষে আছে আশা করা যায় পঞ্চম বর্ষ আসতে আসতে তারা ভাতা পেয়ে যাবে”।