বাঁচতে চান বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের শিল্পী খোকন

বাঁচতে চান বিটিভি ও বেতারের শিল্পী মনিরুল ইসলাম খোকন (৬০)। অর্থকষ্টে বিনা চিকিৎসায় দুর্বিষহ দিন কটছে তার। বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের খান বানিয়ারা গ্রামে । তিনি ওই গ্রামের মৃত ফজলুল হকের পুত্র ও ২ পুত্র সন্তানের জনক। স্ত্রী সন্তান নিয়ে নিজ বাড়িতেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি । খোকনের স্ত্রী সুফিয়া আক্তার ঝর্ণা স্বামীর চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেছেন ।

বুধবার ( ১৯ জুন) খোকনের সঙ্গে কথা বলে ও তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বাল্যকাল থেকেই সংগীতে পদার্পণ মনিরুল ইসলাম খোকনের । তিনি সংগীতের ওপর ঢাকায় বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে সহস্রাধিক গানের গীতিকার এবং নিজের লেখা গানে সুর করেছেন ১২০ টিতে । ১৯৭৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হওয়ার পর অনেক টাকা ব্যয়ে সুস্থ হন তিনি । এরপর থেকে গানের শিক্ষকতা করে চালাতেন সংসার । মাঝে- মধ্যে বেতার ও টিভিতে ডাক পড়লে গান রেকর্ডে পেতেন সম্মানী।
মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রতিক বিষয়ের ওপর বেশ কিছু গান বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচার হলে জনপ্রিয়তা পান খোকন। এ ছাড়া তার লেখা অনেক গান গেয়েছেন দেশের স্বনামধন্য সংগীত শিল্পী কনকচাঁপা, শাকিলা জাফর,এমএ হামিদসহ অনেকেই । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে তার নিজের লেখা গানে সুর ও কন্ঠ দিয়েছেন নিজেই। সংগীতে অবদানের জন্য পেয়েছেন একাধিক পুরষ্কারও ।

২০১৯ সালে তিনি হার্ট অ্যাটাক করেন । যার জন্য কোনো অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনের সুযোগ পান না তিনি । জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে পান সামান্য ভাতা। এরপর বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে গান রেকর্ডের জন্য আর ডাকা হয়না তাকে । নেই কোনো আয়ের উৎস। উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকেও বাদ পড়লে অর্থ সংকটে পড়েন তিনি । ২০২২ সাল পর্যন্ত সংগীত সাধনা চালিয়ে যাওয়া অসুস্থ মনিরুল ইসলাম খোকনের শারীরিক অবস্থা ক্রমশ: অবনতি হতে থাকে। জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে নেয়া হলে পরীক্ষা- নিরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তার হার্টের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে পেসমেকার স্থাপন করা জরুরী । এতে খরচ হবে ১০ লক্ষ টাকা । তার পক্ষে এ ব্যয় মেটানো সম্ভব না হওয়ায় তার পরিবারে নেমে এসেছে অন্ধকার । জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দিন কাটছে গুণীশিল্পী খোকনের ।

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ কুমার বসু বলেন, উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কয়েকদিনের মধ্যে তাকে কিছু আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। এছাড়া অসহায় ও দুস্থ সংগীতশিল্পী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুদানের জন্য তার একটা আবেদন ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসক স্যার বরাবর পাঠানো হয়েছে ।