বাঁশের পণ্য বিক্রি করেই সংসার চলে গাইবান্ধার নবীর হোসেনের
প্লাস্টিক কিংবা সিলভার পণ্যের কাছে হার না মানা বাঁশের কারিগর নবীর হোসেন। বাঙালীর পুরোনো ঐতিহ্যকে আঁকড়ে ধরে এখনো তৈরি করে চলছেন বাঁশের পণ্যসামগ্রী। আর এসব পণ্য বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ তার।
জানা যায়, বুজরুক জামালপুর (ফারাজিপাড়া) গ্রামের ফজল উদ্দিনের ছেলে নবীর হোসেন (৪৫)। ২৫ বছর আগে অভাব অনটনের সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে আনতে বাঁশ শিল্পের কাজ শিখেন। স্থানীয় ফরিদপুর এলাকায় এ কাজটি শেখা তার। তখন থেকেই বাঁশের পণ্যসামগ্রী তৈরি করে এবং তা হাট-বাজারে বিক্রি করে সংসারে হাল ধরেন। তৈরি করেন- ডালি, কুলা, ঢাকি, পলো, ঢালা, চালুন, ঝুঁড়ি, চাটাই, খোঁচা, দারকি, খলই, ডুলি ইত্যাদি জিনিসপত্র। তৎকালীন সময় এসব পণ্যের কদর ছিল অনেক। যার ফলে সেগুলো বিক্রি করে ভালোভাবেই সংসার চলছিল নবীর হোসেনের।
এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই সব পণ্যসামগ্রীর চাহিদা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। বাশেঁর পণ্যের স্থানে প্লাস্টিক-সিলভারের পণ্যের ব্যবহার বেড়ে যায়। তবুও মনোবল হারায়নি নবীর হোসেন। হারাতে দেবেন না গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। সেই সঙ্গে এ পেশা দিয়েই সংসার চালাবেন, এমন দৃঢ় মনোবল নিয়ে এখনো তৈরি করে চলছেন বাঁশের পণ্যসামগ্রী। এ দিয়েই ভালোভাবে সংসার চলছে তার।
বাঁশশিল্পের এই কারিগর নবীর হোসেন জানান, বাঁশের পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া আশপাশের অনেক পরিবারে এ পেশাটি ছেড়ে দিয়েছেন। এখনো ছাড়েন নি তিনি। স্থানীয়ভাবে বাঁশ সংগ্রহ করে এবং তা দিয়ে তৈরিকৃত পণ্য হাট-বাজার-গ্রামে গিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। এটি দিয়ে যা লাভ হয়, সেটি দিয়ে পরিবার পরিজনের মৌলিক চাহিদা মেটানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্পকে ধরে রাখা সম্ভব। ফলশ্রুতিতে কমানো যেতে পারে বেকার সমস্যা। একই সঙ্গে গ্রামীন নারীদেরও সৃষ্টি হতে পারে কর্মসংস্থান।
স্থানীয় এনজিও কর্মী খালেকুজ্জামান বলেন, নবীর হোসেনের তৈরি বাঁশের পণ্যগুলো বেশ দৃষ্টিনন্দন। গুণগত মানও অনেক ভালো। তাকে সহযোগিতা করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন