পানামা পেপারস: বাংলাদেশিদের তথ্য পেতে যে কারণে দেরি হচ্ছে
পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে নাম আসা বাংলাদেশিদের সব তথ্য বিদেশে থাকায় প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে তা পেতে সময় লাগছে বলে মনে করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। এর ফলে এ বিষয়ে দুদকের তদন্ত কবে নাগাদ শেষ হতে পারে সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না তিনি।
সম্প্রতি ‘এক সাক্ষাতকারে এ সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান বলেন: তদন্ত প্রতিবেদন দিতে সময় লাগবে। কারণ তথ্য না পেলে তো আমরা প্রতিবেদন দিতে পারবো না। কেননা তথ্য আমার কাছে নেই, সকল তথ্য বিদেশে রয়েছে।
পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে ফেঁসে আদালতের রায়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পদত্যাগের পর নতুন করে আলোচনার তুঙ্গে ওঠা বিষয়টিতে বাংলাদেশিদের জড়িত থাকা, দুদকের তদন্ত পরিস্থিতি এবং তথ্য প্রাপ্তিতে জটিলতাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান।
বিদেশ থেকে তথ্য পাওয়া অত সহজ ব্যাপার নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন: আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখলেই যে তথ্য পাবো ব্যাপারটি এমন নয়। এক বছর (১৫ মাস) হয়ে গেল, এর মধ্যে আমরা মাত্র তিনটি দেশ থেকে মাত্র তিনজন ব্যক্তির তথ্য পেয়েছি।
তদন্ত পরিস্থিতি তুলে ধরে ইকবাল মাহমুদ বলেন: তদন্ত চলছে। আমরা ১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আমাদের কাছে এসে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ডেকেছিলাম।এর মধ্যে ন’জন তাদের বক্তব্য আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন। বাকীরা দেশের বাইরে থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
‘এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন দেশের কাছে জড়িতদের সম্পর্কে তথ্য চেয়েছি। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে তিন জন ব্যক্তির ব্যাপারে কিছু তথ্য পেয়েছি।
তবে যে তথ্য পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতে ‘ফলাফল বলার সময় এখনও আসেনি’ বলে জানান দুদক চেয়ারম্যান।
তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তথ্য পেতে আরও দেরি হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্ট রিকোয়েস্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করার চিন্তা কমিশনের রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান।
‘আরেকটি উপায়ে তথ্য পাওয়া যায়। সেটা হলো মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্ট রিকোয়েস্ট বা এমএলএআর। আমরা এখনও (এ উপায় গ্রহণ) করিনি, চিন্তাভাবনা করছি। যদি আরও দেরি হয় তবে এর মাধ্যমে তথ্য পেতে চেষ্টা করবো।’
তিনি বলেন: পুরো তথ্য পাওয়ার পরই আমরা বুঝবো যে তদন্ত কি আমরা করবো নাকি সিআইডি করবে, সেটা কেবল তথ্য পাওয়ার পরই বোঝা যাবে। এখনতো বলতে পারছি না।
পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে কোনো কোনো গণমাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম আসার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ এপ্রিল দুদকের উপপরিচালক আখতার হামিদ ভুঁইয়ার নেতৃত্বে তিন সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করে দুদক। দলের অন্য সদস্যরা হলেন সহকারী পরিচালক মজিবুর রহমান ও উপসহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাত।
গত ৪ এপ্রিল মোসাক ফনসেকা নামে পানামার একটি আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ১ কোটি ১৫ লাখ গোপন নথি ফাঁস হয়। এতে প্রায় ২ শতাধিক দেশের ৩ লাখ ১৪ হাজার ব্যক্তির অর্থ পাচার এবং কর ফাঁকির তথ্য ফাঁস হয়। বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলা ওই ঘটনার জেরে সর্বশেষ ক্ষমতা হারিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন