বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে!
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কূটনীতির ভাষায় নোংরা রাজনৈতিক চাল প্রয়োগের অভিযোগ তুলেছেন ভারতের প্রখ্যাত সাংবাদিক এবং বিবিসির সাবেক ভারত প্রধান সুবীর ভৌমিক।
তিনি বলেন, ‘পছন্দের শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে সব সময়ই ‘মানবাধিকার’, ‘গণতন্ত্র’র মতো ইস্যুগুলোকে ব্যবহার করে থাকে যুক্তরাষ্ট্র।’
নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে দেশটির সংশয় প্রকাশ- মার্কিন কূটকৌশলের অংশ বলেও দাবি সুবীরের।
উত্তর ভারতের একটি জনপ্রিয় দৈনিকে সম্প্রতি বাংলাদেশের নির্বাচনে মার্কিন কূটকৌশল নিয়ে বেশকিছু বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস করেন ভারতীয় সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক। খবরটি প্রকাশের পর থেকেই সেদেশের গণমাধ্যমে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে, বিষয়টি নিয়ে সময় সংবাদের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন বিবিসির সাবেক ভারত প্রধান। বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে দাবি করে তিনি বলেন, পছন্দের শক্তিকে ক্ষমতায় বসাতে তারা সব সময় ‘মানবাধিকার’, ‘গণতন্ত্র’র মতো ইস্যুগুলোকে ব্যবহার করে থাকে।
সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক বলেন, ‘ওদের (যুক্তরাষ্ট্র) কিছু স্ট্রাটেজিক অবজেক্টিভস থাকে। সেগুলো পূর্ণ করার জন্য ওরা নির্বাচনে বিষয়গুলো একটি ইস্যু করে। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় এই আমেরিকানরা তাদের গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে সরকার পরিবর্তন ঘটানোর চেষ্টা করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাদের মার্কিনরা পছন্দ করেন না তাদের বিপরীতে ‘মানবাধিকার’, ‘গণতন্ত্র’ এসব হাওয়া ব্যবহার করে।’
বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহ প্রকাশ করা মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন’ – ‘অ্যানফেল’কে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এবং পররাষ্ট্র দফতর অর্থায়ন করে থাকে বলেও তথ্য দেন সুবীর। একইসঙ্গে এমন একটি প্রতিষ্ঠান কী করে নিরপেক্ষ হয়, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।
বিবিসি’র সাবেক ভারত প্রধান বলেন, ‘গেল কয়েকদিন ধরে মার্কিন দূতাবাস ওখানে চিলাচিল্লি করছে। তারা বলছেন, ৩২ জন নির্বাচনী ‘অ্যানফেল’কে আসার কথা ছিল। তাদের ভিসা নিয়ে বাংলাদেশ সরকার নাকি টালবাহানা করছে (যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য)। ‘অ্যানফেল’কে থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়ায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ‘অ্যানফেল’ আসলে সিআইএ’র অর্গানাইজেশন। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, ‘অ্যানফেল’র অর্থ কে দেয়? আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা।’
সুবীর আরো বলেন, ‘এশিয়ার রাজনীতিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় ১৯৯১ সাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিনে একটি নৌঘাঁটি প্রতিষ্ঠার আগ্রহ প্রকাশ করে আসছে।’ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম থেকেই ওই নৌঘাঁটি প্রতিষ্ঠার ঘোর বিরোধী বলেই, যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে বাংলাদেশে ‘মানবাধিকার’ এবং ‘গণতন্ত্র’র প্রশ্ন তুলে সরকার পরিবর্তন ঘটাতে চায় বলেও জানান সুবীর ভৌমিক।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন