বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের ওপর কোনো চাপ নেই : জন কিরবি
সম্প্রতি তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার এই সফর শুধু ভারত বা যুক্তরাষ্ট্রই নয় বরং পুরো বিশ্বই নজরে রাখছে। ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এজেন্ডায় দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক রাজনীতির বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উপেক্ষা করা দুই দেশের কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।
বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে বাধাপ্রদানকারীদের ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হবে বলে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মোদী ও বাইডেনের আলোচনায় সেই প্রসঙ্গ আসবে কি না ভারত সরাসরি তার কোনো জবাব দেয়নি। তবে ভারত বলছে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ যেকোনো বিষয় নিয়েই দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হতে পারে। ঠিক কোন কোন ইস্যুতে তারা কথা বলবেন, তা নিয়ে আগেভাগেই কিছু জানানো হয়নি। তবে দিল্লিতে কূটনৈতিক সূত্রগুলো আভাস দিয়েছে, বাংলাদেশে ‘সুষ্ঠু গণতন্ত্রের স্বার্থে’ যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে দিল্লি তাদের মনোভাব অবশ্যই ওয়াশিংটনের কাছে তুলে ধরবে।
এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই সফরের প্রাক্কালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ফরেন প্রেস সেন্টারে আয়োজিত এক বিশেষ সংবাদ সম্মলে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) স্ট্র্যাটিজিক কমিউনিকেশন পরিচালক অ্যাডমিরাল জন কিরবি। এসময় তিনি বাংলাদেশে মানবাধিকার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
ওই সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক জন কিরবিকে প্রশ্ন করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফরে দক্ষিণ এশিয়ায় গণতন্ত্রের স্থিতিশীলতা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতির মতো বিষয় কি আলোচনায় গুরুত্ব পাবে? কারণ গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের পররাষ্ট্র নীতির মূল বিষয়। বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। এ বিষয়ে জন কিরবিকে প্রশ্ন করা হয় যে, বিশ্বের বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগের পাশে থাকবে কি না?
এর উত্তরে জন কিরবি বলেন, আপনার প্রথম প্রশ্নের জবাবে বলব, প্রেসিডেন্ট বাইডেন পৃথিবীর যেখানেই যান এবং বিশ্বের যে দেশের নেতার সঙ্গেই কথা বলেন সেখানেই মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা তার জন্য একটি সাধারণ বিষয় এবং এটি খুবই সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এরপর বাংলাদেশের বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত তাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করতেই পারে। কিন্তু আপনি সঠিক যে, বাংলাদেশে অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে আমরা আমাদের অবস্থান ইতোমধ্যেই স্পষ্ট করেছি। অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বাধা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা কেবল আমাদের অবস্থান জানাতে পারি। আপনারা জানেন আমাদের অবস্থানটা কোথায়।
এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট এবং প্রকাশ্য। তবে ভারত এবং বাংলাদেশ সরকার তাদের দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতেই পারে। তার এই কথা থেকে এই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, এ ক্ষেত্রে ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্র কোনো ধরনের চাপ দেবে না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন