বাংলাদেশ পুলিশকে বিশ্বমানের ‘স্মার্ট পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ পুলিশকে জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্বমানের ‘স্মার্ট পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করে সেবার মাধ্যমে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে তাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে একটি দক্ষ এবং বিশ্বমানের ‘স্মার্ট পুলিশ’ গড়ে তোলা।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (৩রা জানুয়ারি) মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ছয় দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন।
করোনার কারণে দুই বছরের ব্যবধানে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে সশরীরে উপস্থিত হয়ে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে তাদের সম্পর্কে জনগণের ভীতি দূর করে তাঁদের বাহিনী হিসেবে জনগণের সেবা করছে এবং ভালো কাজগুলো চালিয়ে যেতে বলেছেন।
তিনি বলেন“পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা অটুট রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করুন”। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিকল্পনা অনুযায়ী পুলিশ হবে জনগণের পুলিশ, শোষকের পুলিশ নয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার পুলিশ বাহিনীকে ইতোমধ্যেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যানবাহন সরবরাহ করেছে। পুলিশের গতিশীলতা ত্রিমাত্রিক পর্যায়ে উন্নীতকরণে ইতোমধ্যে রাশিয়া থেকে ২টি হেলিকপ্টার ক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ এভিয়েশন ইউনিট গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।
প্রধানমন্ত্রী একটি খোলা জিপে করে বাংলাদেশ পুলিশের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। পুলিশের বিভিন্ন দল বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করে।
পরে তিনি ১১৭ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) সাহসিকতা, রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) সাহসিকতা, বিপিএম সেবা এবং পিপিএম-সেবা প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন তাকে স্বাগত জানান। এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য ও ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।
সরকার প্রধান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। তার সুফল জনগণ এখন ভোগ করছে। বঙ্গবন্ধু সর্বদা এ দেশের পুলিশকে ‘জনগণের পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করতেন এবং আমি ধন্যবাদ জানাই আমাদের পুলিশ বাহিনী এখন জনগণের পুলিশ হিসেবেই তাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আগে পুলিশের নাম শুনলে মানুষ ভয় পেত। এখন জানে পুলিশ সেবা দেয় ও তাদের পাশে দাঁড়ায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের তথা জনগণের আস্থা অর্জন করা যেকোন বাহিনীর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনারা তা করে যাচ্ছেন। অত্যন্ত মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই আপনারা এই সেবা করে যাবেন। জনগণের মনে পুলিশের প্রতি যে আস্থা সৃষ্টি হয়েছে সেটা যেন অক্ষুন্ন থাকে। আমরা চাই আমাদের পুলিশ বাহিনী জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী হিসেবেই জাতির পিতার সেই আকাঙ্খা পূরণ করবে।
তিনি বলেন, যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বিপদ আপদে পুলিশ সবসময় মানুষের পাশে আছে। পাশাপাশি মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগেও পুলিশের ভুমিকা রয়েছে। মানুষের জান-মাল বাঁচাবার জন্য নিজের জীবনকেও উৎসর্গ করেন। যে কোন ঝুঁকি নিতে পিছপা না হওয়াটাই পুলিশের কাজ এবং সেটা তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গেই করে যাচ্ছেন। এজন্য পুলিশ বাহিনীকে তিনি ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে ২০১৩,১৪ ও ১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে বিএনপি জামাতের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার সময় পুলিশ সদস্যদের বলিষ্ঠ ভূমিকার প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, সে সময় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষ অগ্নিদগ্ধ এবং ৫শ’ মানুষ নিহত হয়েছিল। পুলিশ বাহিনীও রেহাই পায়নি। ২৯ জন পুলিশ সদস্যও নির্দয় নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন এবং অনেকে আহত হন। খুব নির্দয়ভাবে পুলিশকে বিএনপি-জামাত-শিবিররা যেভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করেছে তা কোথাও দেখা যায়না। এদের হামলায় সাড়ে তিন হাজার বাস-ট্রাক, ১৯টি ট্রেন, ৯টা লঞ্চ পুড়ে ধ্বংস হয়। ৭০টি সরকারি অফিস ও স্থাপনা ভাংচুর করে এবং ৬টি ভূমি অফিস সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন