হঠাৎ বাংলাদেশ ভ্রমণে চার দেশের সতর্কতা জারি
বিরোধীদল বিএনপির নেতা বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে অবস্থানরত নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের চার দেশ। জারিকৃত এ বার্তায় দেশগুলোর নাগরিকদের বাংলাদেশে চলাচলে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে চলাচলে সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। দেশগুলোর ঢাকায় নিযুক্ত দূতাবাস ও হাই-কমিশনের ওয়েবসাইটে এ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশে অবস্থানকারী এ দেশগুলোর নাগরিকদের জনসমাগম এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় গণমাধ্যমের ওপর নজর রাখার পরামর্শও দিয়েছে এ চার দেশ।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য প্রধান প্রধান শহরগুলোতে বিক্ষোভ সতর্কতা জারি করে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাস।
দূতাবাসের সতর্ক বার্তায় বলা হয়, বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলার রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বিক্ষোভে স্থানীয় পরিবহন সেবা, স্কুল, শপিং মল এবং অন্যান্য স্থাপনায় প্রভাব পড়তে পারে অথবা নাও পারে।
সতর্ক বার্তায় বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের স্থানীয় গণমাধ্যমের ওপর দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া বড় ধরনের সমাবেশ, প্রতিবাদ এড়িয়ে চলা ও আশপাশের পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দেয়া হয়।
বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্কতা জারি করে নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাজ্য। বাংলাদেশে নাগরিকদের সব সময় সতর্কতা অবলম্বন ও বড় ধরনের জনসমাবেশ, রাজনৈতিক অফিস এবং সমাবেশ এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার রায় ঘিরে একই ধরনের সতর্কতা জারি করেছে কানাডা। রায় পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেকোনো মুহূর্তে সহিংস আকার ধারণ করতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশটি। বিক্ষোভ, জনসমাবেশ এড়িয়ে চলতে ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী বাংলাদেশে নাগরিকদের চলাচলের পরামর্শ দিয়েছে কানাডা।
একই ধরনের সতর্কতা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটি বলছে, রায়কে কেন্দ্র করে পরিবহন সেবা ব্যাহত হতে পারে। এজন্য নাগরিকদের সতর্কতার সঙ্গে বাংলাদেশে চলাচলের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান হাই-কমিশন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় একটি মামলা করে দুদক। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
এই মামলার দীর্ঘ শুনানির পর বৃহস্পতিবার ঢাকার আদালত খালেদা জিয়াকে বয়স বিবেচনায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া তার ছেলে ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আরো চার আসামিকে ১০ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে।
এদিকে, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সরকারদলীয় নেতা-কর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঢাকার উপকণ্ঠ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার প্রাণহারি খবর পাওয়া গেছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন