বাচ্চাদের গরুর দুধ খাওয়ানো কী নিরাপদ?
অনেক পরিবারে দেখা যায় মা চাকরিজীবী। তাই শিশু জন্ম নেয়ার কয়েক মাস পরই তাকে গরুর দুধ খাওয়ানোর অভ্যেস গড়ে তোলা হয়।
কারণ যত তাড়াতাড়ি শিশু মায়ের দুধের পরিবর্তে বিকল্প কিছু খাবে, ততই মায়ের জন্য ভালো। তাতে তার পক্ষে চাকরি চালিয়ে নেয়া অনেক সহজ হবে।
কিন্তু প্রশ্ন হল, এত কম বয়সে শিশুকে গরুর দুধ খাওয়ানো কী নিরাপদ?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর বয়স ৬ মাস না হওয়া পর্যন্ত তাকে মায়ের দুধ ছাড়া আর কিছুই খাওয়ানো যাবে না। এই সময়ের পর থেকে ১ বছর পর্যন্ত অল্প করে গরুর দুধ দেয়া যেতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ১ বছর বয়সী শিশুর শরীরে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিনের চাহিদা পূরণের জন্য দিনে ১-২ কাপ গরুর দুধ খাওয়ানো জরুরি।
১ বছরের পর থেকে ব্রেস্ট ফিডিং না করিয়ে শিশুকে শুধু গরুর দুধ খাওয়ালে কোনো ক্ষতি হয় না।
তবে প্রতিটি শিশুর শারীরিক চাহিদা যেহেতু ভিন্ন ভিন্ন হয়, তাই ডায়েটে কোনো পরিবর্তনের আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেয়াটা জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ১ বছরের আগে কেন গরুর দুধ খাওয়ানো যাবে না সে সম্পর্কে জেনে নিই;
* ১ বছরের আগে শিশুর হজম ক্ষমতা সেই পর্যায়ে পৌঁছায় না। তাই সে মায়ের দুধ ছাড়া অন্য কিছু খেতে পারবে না।
* এ সময়ের আগে যদি শিশুকে গরুর দুধ খাওয়ানো হয়, তাহলে এতে থাকা প্রোটিন এবং মিনারেল হজম করতে না পেরে শিশুর কিডনির সমস্যা, রক্তস্বল্পতা, অ্যালার্জি, ডায়ারিয়া, পেটের রোগ, বমি প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বয়স অনুযায়ী শিশুর ডায়েট চার্ট:
একদিন থেকে ৪ মাস: নবজাতককে কেবল মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। এই সময় আর কোনো খাবার দেয়া চলবে না। আর ১-৪ মাস বয়স পর্যন্ত প্রতি ২-৪ ঘণ্টা অন্তর বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
৫-৬ মাস: এ বয়সের শিশুরাও খাবে বুকের দুধ। যদিও এই সময় পরিমাণ একটু বাড়বে। কারণ এ বয়সে এসে শিশুর হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘঠতে শুরু করে।
৬-৮ মাস: এই শিশুদের বুকের দুধের পাশাপাশি অল্প করে গলা ভাত, ঢিলা সবজি খিচুরি, ওটস, কলা, আম, এবং নাশপাতি জুস করে খাওয়ানো যেতে পারে। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে।
৮-৯ মাস: এই বয়সীদের বুকে দুধের সঙ্গে বার্লি, সিদ্ধ সবজি, ভাত, খিচুরি ও ওটস খাওয়াতে পারেন। ফলের ক্ষেত্রে খাওয়াতে পারেন আপেল, কলা, খেজুর (বীজ ছাড়া), আঙুর, আম, নাশপাতি প্রভৃতি।
১০-১২ মাস: এই শিশুদের খাওয়াতে হবে কলা, আপেল, পেঁপে, আঙুর, আম, আলু, রাঙা আলু, ব্রকলি, কর্নফ্লাওয়ার, রাজমা, চানা, দই, চিজ প্রভৃতি। এই বয়সে অল্প করে ডিমের সাদা অংশ, মাছ এবং মাংসও খাওয়ানো যেতে পারে।
তারপর শিশুর ডায়েটে কোনো পরিবর্তন আনতে হলে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে নেবেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন