বাজেটের পর সফটওয়্যার খাতে শঙ্কা কেন?
২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সফটওয়্যার আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করায় দেশীয় সফটওয়্যার শিল্পের বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা। তবে অনলাইন কেনাকাটা বা ই-কমার্সকে ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখায় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে তারা। একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সেবার ওপর থেকে সম্পূর্ণ মূসক প্রত্যাহারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্যে ঘোষিত বাজেট নিয়ে আজ রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বাণিজ্য সংগঠনগুলো এসব বিষয় তুলে ধরে।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয় বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য)।
সংবাদ সম্মেলনে বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন: অপারেটিং সিস্টেমস, ডেটাবেজ, ডেভেলপমেন্ট টুলস, এবং সাইবার সিকিউরিটি আমদানি ওপর থেকে শুল্ক কমানোর জন্য বেসিস থেকে প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু ঢালাওভাবে এগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য কম্পিউটার সফটওয়্যারের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে এবং মূসক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় এরকম সফটওয়্যারও বিদেশ থেকে আমদানি উৎসাহিত হবে এবং দেশীয় সফটওয়্যার শিল্প বিকশিত হবে না। পাশাপাশি, তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সেবার ওপর আলোচ্য বাজেটে মূসক বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সেবার ওপর থেকে সম্পূর্ণরূপে মূসক প্রত্যাহারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য প্রস্তাব করেন তিনি। তবে, অনলাইনে পণ্য বিক্রয় তথা ই-কমার্স ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখায় অর্থমন্ত্রী এবং বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ জানান বেসিস সভাপতি।
একই সঙ্গে ‘অনলাইনে পণ্য বিক্রয়’ এবং ‘ভার্চুয়াল বিজনেস’ এর সংজ্ঞা স্পষ্ট করারও অনুরোধ করেন তিনি। সকল বিভাগ ও দপ্তরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপাদান ইন্টারনেট এর ওপর থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহারে পুনরায় অনুরোধ করেন।
বিসিএস সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার বলেন: মূসক অব্যাহতি সংক্রান্ত নতুন জারির ফলে কম্পিউটার ও এর যন্ত্রাংশের মূল্য প্রায় ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে যা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অন্তরায়। কম্পিউটার, প্রিন্টার এবং ফটোকপিয়ারে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্থিতিশীল রাখার জন্য ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার অত্যাবশ্যকীয় পণ্য। ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার এর শুল্কহার ১ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। তিনি ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার এর শুল্কহার পূর্বের অবস্থায় রাখার অনুরোধ করেন।
আইএসপিএবি সভাপতি এম এ হাকিম বলেন: ইন্টারনেট সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌছানোর জন্য নেটওয়ার্ক ইকুইপমেন্ট-এর প্রয়োজন হয়। নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতির সহজলভ্যতা ও সুলভ মূল্য আইসিটি উন্নয়নে প্রধান হাতিয়ার। ইন্টারনেট যন্ত্রপাতি যেমন, মডেম, ইথারনেট ইন্টারফেস কার্ড, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সুইচ, হাব, রাউটার, সার্ভার ব্যাটারির উপর বর্তমানে ২২ দশমিক ১৬ শতাংশ ভ্যাট ও শুল্ক আরোপিত রয়েছে।
এই ভ্যাট-শুল্ককে এই শিল্পের প্রসারে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা মন্তব্য করে তা কমিয়ে শূন্য শতাংশ করার আবেদনে সাড়া দিতে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বেসিস’র জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান, সহ-সভাপতি (প্রশাসন) শোয়েব আহমেদ মাসুদ, সহ-সভাপতি (অর্থ) মুশফিকুর রহমান। এছাড়াও বিসিএস সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার, বাক্য’র সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান শরীফ প্রমুখ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন