বাজেট প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি
আসন্ন ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটকে অলীক স্বপ-কল্পনায় প্রস্তাবিত বাজেট আখ্যায়িত করে এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের কারণে বিএনপি সংসদের বাইরে রয়েছে।
জাতীয় সংসদে বাজেট পেশের ১০ দিন পর এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই বাজেট বিশ্লেষণ করে আমরা যুগপৎ বিস্মিত, ক্ষুব্ধ এবং হতাশ হয়েছি।
শনিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন বাজেট নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানায় বিএনপি।
গেল ১ জুন জাতীয় সংসদে ৪ লাখ ২৬৬ কোটির টাকার বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
প্রস্তাবিত এই বাজেটের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, টাকার অংকের দিক থেকে এই বাজেট বাংলাদেশের জন্য সর্বকালের বৃহত্তম বাজেট। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা বলতে পারি এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয়। কেবলমাত্র অলীক স্বপ-কল্পনাই এই প্রস্তাবিত বাজটের ভিত্তি। বর্তমান সরকার যেসব মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে সবগুলোর কাজ ২০১৭-১৮ অর্থবছরর মধ্য বাস্তবায়ন করাই সরকারের অষোষিত লক্ষ্য। এর জন্য প্রয়োজন হব প্রচুর অর্থের। সেই অর্থের যোগান দেখানার জন্যই জনগণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে একটি গাণিতিক হিসেবের বাজেট হিসেবে এই বাজেট পেশ করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পরবর্তী নির্বাচনের পূর্বে সরকার এইসব প্রকল্পকে নির্বাচনী প্রচারণার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে। তারা বলতে চাইবে দেশের একমাত্র স্বার্থক উন্নয়নকারী তারাই।
এরআগে গত ২ জুন এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, এই বাজেট লুটপাটের বাজেট। এ বাজেটে আওয়ামী লীগকে চুরি করার সুযোগ দিয়েছে।
খালেদা জিয়া আরও বলেন, এ বাজেট তো আর অর্থমন্ত্রীর না। এ বাজেটও তৈরি হয় হাসিনার কথামতো। কাজেই হাসিনা যা চান বাজেট তাই। আর এই বাজেট কি আর বাজেট থাকবে নাকি। পরে দেখবেন বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ থেকে ২০ হাজার বাড়িয়ে নেবে।
প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘দুর্নীতিবান্ধব বাজেট’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশও (টিআইবি)। তারা বলছে, ‘সাধারণ মানুষের করের অর্থে দুর্নীতিগ্রস্ত, জালিয়াতিতে জর্জরিত রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন ব্যাংকিং খাতের অনৈতিক পুনর্মূলধনীকরণ, সীমিত মধ্যম ও ক্ষুদ্র আয়ের করদাতাদের ওপর বৈষম্যমূলক করারোপ, কালো টাকা বৈধতার অসাংবিধানিক সুযোগের ধারাবাহিকতা, মেগা প্রকল্পে ব্যয় নিয়ন্ত্রণ হ্রাসে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতের সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনাহীন বাজেট ২০১৭-১৮ দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করবে।
বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় রয়েছে সিপিডির। বাজেট নিয়ে সিপিডির পর্যালোচনা সংস্থাটির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাজেটে ঘাটতি মেটাতে ৭.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক ঋণের সহায়তা আমাদের আশ্চর্য করেছে। কারণ, আমাদের ২০১৬ সালে ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক ঋণের সহায়তা আসে যার পরিমাণ মাত্র ২.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়াও বৈদেশিক ঋণ ব্যয় করতে পারছে না। তারপরও সরকার কিভাবে প্রায় তিনগুণ বাড়ানো হল তা জানি না। তাই ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক উৎস হতে অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়েও সংশয় প্রকাশ করে সিপিডি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন