বাড়ছে না করমুক্ত আয়সীমা, সাড়ে ৩ লাখই থাকছে করমুক্ত আয়সীমা

করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে না। আগামী ২০২৪-২৫ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকাই থাকছে করমুক্ত আয়। চলতি অর্থবছরের মতো এবারের জাতীয় বাজেটেও সাড়ে ৩ লাখ টাকা করমুক্ত আয়ের সীমা প্রস্তাব করা হয়েছে।

তবে স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা, ফার্ম ও হিন্দু অবিভক্ত পরিবারের জন্য করধাপ ও করহার পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনে এই প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদ্যমান স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা, ফার্ম ও হিন্দু অবিভক্ত পরিবারের করমুক্ত আয়ের সীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

একই সঙ্গে স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা, ফার্ম ও হিন্দু অবিভক্ত পরিবারের জন্য করধাপ সমন্বয়পূর্বক বিদ্যমান সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশে নির্ধারণ করা হবে।

এ ছাড়া স্বনির্ধারণী ব্যবস্থায় রিটার্ন দাখিলের বিধান চালু করা হবে। রিটার্ন জমার সময় সর্বোচ্চ ১ মাস বাড়াতে পারবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। রিটার্ন দাখিলে করদাতার অজ্ঞতাসহ অনিবার্য কিছু কারণে অর্জিত সম্পদ প্রদর্শনে ত্রুটিবিচ্যুতি থাকতে পারে। এ অবস্থায় করদাতাদের আয়কর রিটার্নে এই ত্রুটি সংশোধনের সুযোগ প্রদান এবং অর্থনীতির মূল স্রোতে অর্থপ্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়কর আইনে কর প্রণোদনা-সংক্রান্ত একটি অনুচ্ছেদ সংযোজন হয়েছে।

প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী, দেশের প্রচলিত আইনে যাই থাকুক না কেন, কোনো করদাতা স্থাবর সম্পত্তি যেমন, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট ও ভূমির জন্য নির্দিষ্ট করহার এবং নগদসহ অন্যান্য পরিসম্পদের ওপর ১৫% কর পরিশোধ করলে কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকারের প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না। এমন সব বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

জানা গেছে, আগামী অর্থবছরেও ব্যক্তির আয়ের প্রথম সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয় করমুক্ত এবং পরবর্তী ১ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর ৫ শতাংশ কর নির্ধারণ করা হয়েছে। পরবর্তী ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর ২০ শতাংশ, পরবর্তী ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ওপর ২৫ শতাংশ এবং অবশিষ্ট আয়ের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যক্তিগত করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সর্বোচ্চ সীমা ২০০৯-১০ অর্থবছরে ছিল ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, যা ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। নারী, প্রবীণ নাগরিক, শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য এবং গেজেটেড যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা আরও বেশি।

এতে স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের করভার লাঘবের ফলে জীবনযাত্রায় কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে এসেছে এবং করদাতারা নিয়মিতভাবে কর পরিশোধে উৎসাহিত হয়েছেন। জানা গেছে, ২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সাধারণ করদাতা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মহিলা ও ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতা ৪ লাখ টাকা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি করদাতা ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতা ৫ লাখ টাকা, তৃতীয় লিঙ্গ করদাতা ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের ক্ষেত্রে এরূপ প্রত্যেক সন্তান/পোষ্যের জন্য করমুক্ত সীমা ৫০ হাজার টাকা বেশি।