বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে ডিম, পেঁয়াজ, রসুন: আদার দাম বাড়তি, স্বস্তি নেই সবজিতে

বাজারে ডিম ও পেঁয়াজের দাম আগে থেকেই বাড়তি। মাছ-মাংস কিনতেও হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা। এবার বাড়তি দাম এসে ঠেকেছে মসলাজাত পণ্য রসুনে। বাড়তি দামে রসুন কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। গতকাল শনিবার পাবনার বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব পণ্যের পাশাপাশি রসুনের দামও এখন বেশি।

বেশ কয়েক মাস ধরে অস্থির মাছ, মাংসের বাজার, কাঁচাবাজার, এমনকি মসলাজাত পণ্যের বাজার। সম্প্রতি দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুরু হয়েছে তদারকি ও আমদানি। ভারত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর অন্যান্য দেশ থেকে আমদানির অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। এরপরও নিয়ন্ত্রণে নেই পণ্যের কেনাবেচা।

শনিবার (২৬ আগস্ট) জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেলো দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯৫ টাকা কেজিতে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। কয়েক দিনের ব্যবধানে রসুনের দামও কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা। মাস দেড়েক আগেও রসুনের কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে ছিল। সেটা বাড়তে বাড়তে ২২০ টাকায় এসেছে। পাইকারিতে দাম বাড়ায় খুচরায়ও বেড়েছে। তদারকি-অভিযান শুরু হলে পণ্যটির দাম হয়তো কিছুটা কমবে।

বাজারে পেঁয়াজ, রসুনের মতো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আদা। কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে ইন্দোনেশিয়ার আদা ২৫০ থেকে ২৬০ এবং মিয়ানমারের আদা ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনি প্রতিকেজি ১৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু প্যাকেটজাত চিনি পাওয়া যাচ্ছে না।

অন্যদিকে,বেড়েছে আলুর দাম। বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টি, পরিবহণ সংকটের কারণে আলুর পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় দাম বেশি। যদিও বাজারে পর্যাপ্ত আলু রয়েছে। উল্টো কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। কাঁচাবাজারের দামের কথা বলাই বাহুল্য। বাজারে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বেশির ভাগ সবজি। প্রতি কেজি পটল, চিচিঙা, ছোট শসা, জালি কুমড়া, কাঁকরোল, ঝিঙা, বরবটি, রান্না করার শসা, কচুর মুখী, করলা-কোনটার দামই কমছেনা। কাঁচামরিচ প্রতিকেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বেড়েছে মুরগির ডিমের দাম।

মাংসের বাজারের চিত্রও অভিন্ন। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি কিনতে কেজিতে খরচ ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা। গরু ও খাসির মাংস আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজারেও নেই সুখবর। বাজারে বেড়েছে ইলিশের সরবরাহ তবে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে এখনও। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ১ হাজার টাকারও বেশি। আর ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকায়। প্রতিকেজি রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০/৪০০ টাকায়। তেলাপিয়ার কেজি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা, পাঙাশ ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, চাষের কই ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বাজারে বিভিন্ন শাকের দাম কিছুটা স্থিতিশীল। ক্রেতারা বলছেন, প্রতি কেজি লাল শাক ৬০ টাকা কেজি, মুলা, কলমি শাক ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে পুঁই, মিষ্টি কুমড়া, লাউ শাকের আঁটি ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। একটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার বরুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা জুয়েল রানা এই প্রতিনিধিকে বলেন, চাল, ডাল, মাছ ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে সংসারের অন্যান্য ব্যয় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কষ্টটা অনেক বেশি।